নটীর পূজা
শ্রীমতীর গান
আর রেখো না আঁধারে আমায়
দেখতে দাও।
তোমার মাঝে আমার আপনারে
আমায় দেখতে দাও।
কাঁদাও যদি কাঁদাও এবার,
সুখের গ্লানি সয় না যে আর,
যাক না ধুয়ে নয়ন আমার
অশ্রুধারে,
আমায় দেখতে দাও।
জানি না তো কোন্‌ কালো এই ছায়া,
আপন ব’লে ভুলায় যখন
ঘনায় বিষম মায়া।
স্বপ্নভারে জমল বোঝা,
চিরজীবন শূন্য খোঁজা,
যে মোর আলো লুকিয়ে আছে
রাতের পারে
আমায় দেখতে দাও।


একজন অন্তঃপুররক্ষিণীর প্রবেশ

রক্ষিণী। শোনো, শোনো, শ্রীমতী।

মালতী। কেন নিষ্ঠুর হচ্ছ তোমরা। আর আমাদের যেতে বলো না। আমরা দুটি মেয়ে এই উদ্যানের কাছে মাটির ’পরে বসে থাকি না— তাতে তোমাদের কী ক্ষতি হবে?

রক্ষিণী। তোমাদেরই বা কী তাতে প্রয়োজন?

মালতী। ভগবান বুদ্ধ যে-উদ্যানে একদিন প্রবেশ করেছিলেন তার শ্রেষপ্রান্তেও তাঁর পদধুলা আছে। তোমরা যদি ভিতরে না যেতে দাও তাহলে আমরা এইখানে সেই ধুলায় বসে মনের মধ্যে তাঁর জন্মোৎসব গ্রহণ করি— মন্ত্রও বলব না, অর্ঘ্যও দেব না।

রক্ষিণী। কেন বলবে না মন্ত্র? বলো, বলো। শুনতেও পাব না এত কী পাপ করেছি। অন্য রক্ষিণীরা দূরে আছে, এইবেলা আজ পুণ্যদিনে শ্রীমতী, তোমার মধুর কণ্ঠ থেকে প্রভুর স্তব শুনে নিই। তুমি জেনো আমি তাঁর দাসী। যেদিন তিনি এসেছিলেন অশোকছায়ায় সেদিন আমি যে তাঁকে এই পাপচোখে দেখেছি, তার পর থেকে আমার অন্তরে তিনি আছেন।

শ্রীমতী।                 নমো নমো বুদ্ধ দিবাকরায়

                        নমো নমো গোতম-চন্দিমায়,