প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে স্বামীকৃত সকল-প্রকার অসম্মাননা এবং অন্যায় স্ত্রীকে অগত্যা সহ্য এবং মার্জনা করিতেই হয়–কিঞ্চিৎ অশ্রুজলসিক্ত বক্রবাক্যবাণ অথবা কিয়ৎকাল অবগুণ্ঠনাকৃত বিমুখ মৌনাবস্থা ছাড়া আর কোনো অস্ত্র নাই। অতএব আমাদের সমাজে স্ত্রীলোকের সর্বদা অভিমান জিনিসটা সত্য সন্দেহ নাই। কিন্তু তাহা সর্বত্র সুন্দর নহে ইহাও নিশ্চয়; কারণ, যাহাতে কাহারো অবিমিশ্র স্থায়ী হীনতা প্রকাশ করে তাহা কখনোই সুন্দর হইতে পারে না।
কবিদলের গানে রাধিকার যে অভিমান প্রকাশ হইয়াছে তাহা প্রায়শই এইরূপ অযোগ্য অভিমান।
এই কয়েক ছত্রের মধ্যে প্রেমের যেটুকু ইতিহাস যে ভাবে লিপিবদ্ধ হইয়াছে তাহাতে কৃষ্ণের উপরেও শ্রদ্ধা হয় না, রাধিকার উপরেও শ্রদ্ধা হয় না, এবং চন্দ্রাবলীর উপরেও অবজ্ঞার উদয় হয়।
কেবল নায়ক-নায়িকার অভিমান নহে, পিতা-মাতার প্রতি কন্যার অভিমানও কবিদলের গানে সর্বদাই দেখিতে পাওয়া যায়। গিরিরাজমহিষীর প্রতি উমার যে অভিমানকলহ তাহাতে পাঠকের বিরক্তি উদ্রেক করে না-তাহা সর্বত্রই সুমিষ্ট বোধ হয়। তাহার কারণ, মাতৃস্নেহে উমার যথার্থ অধিকার সন্দেহ নাই; কন্যা ও মাতার মধ্যে এই-যে আঘাত ও প্রতিঘাত তাহাতে স্নেহসমুদ্র কেবল সুন্দরভাবে তরঙ্গিত হইয়া উঠে।
মাতা-কন্যা এবং নায়ক-নায়িকার মান-অভিমান যে কবিদলের গানের প্রধান বিষয় তাহার একটা কারণ, বাঙালির প্রকৃতিতে অভিমানটা কিছু বেশি; অর্থাৎ অন্যের প্রেমের প্রতি স্বভাবতই তাহার দাবি অত্যন্ত অধিক; এমন-কি, সে প্রেম অপ্রমাণ হইয়া গেলেও ইনিয়া-বিনিয়া কাঁদিয়া রাগিয়া আপনার দাবি সে কিছুতেই ছাড়ে না। আর-একটা কারণ, এই মান-অভিমানে উত্তর-