পরিশিষ্ট
ন্যাকামি

১। জানিয়া না-জানার ভান।

২। জানিয়া না-জানার ভাব প্রকাশ করা।

৩। জেনেও জানি না, এই ভাব প্রকাশ করা।

৪। জানিয়াও না-জানার ভান।

৫। অবগত থাকিয়া অজ্ঞতা দেখানো।

৬। বিলক্ষন জানিয়াও অজ্ঞানতার লক্ষন প্রকাশ করা।

৭। বুঝেও নিজেকে অবুঝের ন্যায় প্রতিপন্ন করা।

৮। সেয়ানা হয়ে বোকা সাজা।

৯। জেনেশুনে ছেলেম।

১০। বুঝে অবুঝ হওয়া। জেনেশুনে হাবা হওয়া।
১১। ইচ্ছাকৃত অজ্ঞতা এবং মিথ্যা সরলতা।

প্রথম হইতে সপ্তম সংজ্ঞা পর্যন্ত সকলগুলির ভাব প্রায় একই রকম। অর্থাৎ সকলগুলিতেই জানিয়াও না-জানার ভান, এই অর্থই প্রকাশ পাইতেছে; কিন্তু এরূপ ভাবকে অসরলতা মিথ্যাচরণ বা কপটতা বলা যায়। কিন্তু কপটতা ও ন্যাকামি ঠিক একরূপ জিনিস নহে। অষ্টম সংজ্ঞায় লেখক শ্রীযুক্ত মহেন্দ্রনাথ রায় যে বলিয়াছেন, সেয়ানা হইয়া বোকা সাজা, ইহাই আমার ঠিক বোধ হয়। জানিয়া না-জানার ভাব প্রকাশ করিলেই হইবে না, সেইসঙ্গে প্রকাশ করিতে হইবে আমি যেন নির্বোধ, আমার যেন বুঝিবার শক্তিই নাই। ষষ্ঠ এবং সপ্তম সংজ্ঞাতেও কতকটা এই ভাব প্রকাশ পাইয়াছে, কিন্তু তেমন স্পষ্ট হয় নাই। নবম ও দশম সংজ্ঞা ঠিক হইয়াছে। কিন্তু অষ্টম হইতে দশম সংজ্ঞাতে বোকা, ছেলেমি, হাবা শব্দ ব্যবহৃত হইয়াছে; এই শব্দগুলি সংজ্ঞানির্দেশযোগ্য। অর্থাৎ হাবামি, বোকামি ও ছেলেমির বিশেষ লক্ষণ কী তাহা মনোযোগ-সহকারে আলোচনা করিয়া দেখিবার বিষয়। এইজন্য একাদশ সংজ্ঞার লেখক যে ইচ্ছাকৃত অজ্ঞতার ভানের সঙ্গে ‘মিথ্যা সরলতা’ শব্দ যোগ করিয়া দিয়াছেন, তাহাতে ন্যাকামি শব্দের অর্থ পরিষ্কার হইয়াছে। অজ্ঞতা এবং সরলতা উভয়ের ভান থাকিলে তবে ন্যাকামি হইতে পারে। আমাদের পুরস্কৃত সংজ্ঞালেখক লিখিয়াছেন, “ন্যাকামি বলিতে সাধারণত জানিয়া শুনিয়া বোকা সাজার ভাব বুঝায়” পরে দ্বিতীয় পদে তাহার ব্যাখ্যা করিয়া বলিয়াছেন, “যেন কিছু জানে না, যেন কিছু বুঝে না এই ভাবের নাম ন্যাকামি।” যেন কিছু জানে না, যেন কিছু বুঝে না বলিতে লোকটা যেন নেহাত হাবা, নিতান্ত খোকা এইরূপ বুঝায়, লোকটা যেন কিছু বুঝেই না, এবং তাহাকে বুঝাইবার উপায়ও নাই।


আহ্লাদে

১। স্বার্থের জন্য বিবেচনারহিত।

২। যাহার পরিমানাধিক আহ্লাদে সর্বদাই মত্ত।

৩। যে সকল-তা’তেই অন্যায়রূপে আমোদ চায়, অথবা যে হক্ না হক্ দাঁত বের করে।

৪। অযথা আনন্দ বা আভিমান প্রকাশক।

৫। অন্যকে অসন্তুষ্ট করিয়া যে নিজে হাসে।