বাংলা কৃৎ ও তদ্ধিত
হইয়াছে, তখন বুঝিতে হইবে মূল ধাতুটি তাকা। এইরূপ, আছড়া চট্‌কা কাম্‌ড়া ইত্যাদি।

অন্‌+ই প্রত্যয়সিদ্ধ অধিকাংশ ক্রিয়াবাচক শব্দই অপ্রিয়ভাব ব্যক্ত করে; যথা, বকুনি ধমকানি চমকানি হাঁপানি শাসানি টাটানি নাকানি-চোবানি কাঁদুনি জ্বলুনি কাঁপুনি ফোঁস্‌লানি ফোঁপানি গোঙানি ঘ্যাঙানি খ্যাঁচ্‌কানি কোঁচকানি (ভুরু) বাঁকানি (মুখ) খিঁচুনি (দাঁত) খ্যাঁকানি ঘস্‌ড়ানি ঘুরুনি (চোখ) চাপুনি চেঁচানি ভ্যাঙানি (মুখ) রগড়ানি রাঙানি (চোখ) লাফানি ঝাঁপানি।

ব্যাতিক্রম : বাঁধুনি (কথার) শুনানি দুলুনি বুনুনি (কাপড় বা ধান) বাছনি (বাছাই)।

ধ্বন্যাত্মক শব্দের মধ্যে যেগুলি অসুখব্যঞ্জক তাহার উত্তরেই অন্‌+ই প্রত্যয় হয়; যথা, দব্‌দবানি ঝন্‌ঝনানি কন্‌কনানি টন্‌টনানি ছট্‌ফটানি কুট্‌কুটুনি ইত্যাদি।

অন্‌+ই প্রত্যয়ের সাহায্যে বাংলার কয়েকটি পদার্থবাচক বিশেষ্যপদ সিদ্ধ হয়; দৃষ্টান্ত, ছাঁকনি নিড়নি চালুনি বিননি (চুলের) চাট্‌নি ছাউনি নিছনি তলানি (তরলপদার্থের তলায় যাহা জন্মে)।

ব্যক্তি ও বস্তুর বিশেষণ : রাঁধুনি (ব্রাহ্মণ) ঘুম-পাড়ানি পাট-পচানি ইত্যাদি।

না প্রত্যয়

না প্রত্যয়যোগে বর্ণের বিশেষ পরিবর্তন হয় না; পাখা, পাখনা, জাব (গরুর) জাবনা, ফাতা (ছিপের) ফাৎনা, ছোট ছোটনা (ধান)।

আনা প্রত্যয়

বাবুয়ানা সাহেবিয়ানা নবাবিয়ানা মুন্সিয়ানা। ই প্রত্যয় করিয়া হিঁদুয়ানি।

ল্‌ প্রত্যয়

কাঁক্‌ড়োল (কাঁকুড় হইতে) হাবল খাবল পাগল পাকল (পাক অর্থাৎ ঘূর্ণাবিশিষ্ট) হাতল মাতল (মত্ত হইতে মাতা)।

র্‌ প্রত্যয়

বাংলা ধ্বন্যাত্মক শব্দের উত্তর এই র্‌ প্রত্যয়ে অবিরামতা বুঝায়; যথা, গজ্‌গজ্‌ হইতে গজর্‌ গজর্‌, বক্‌বক্‌ হইতে বকর্‌ বকর্‌, নড়্‌বড়্‌ হইতে নড়র্‌ বড়র্‌, কট্‌মট্‌ হইতে কটর্‌ মটর্‌, ঘ্যান্‌ঘ্যান্‌ হইতে ঘ্যানর্‌ ঘ্যানর্‌, কুটকুট হইতে কুটুর্‌ কুটুর্‌।

আল্‌ প্রত্যয়

দয়াল্‌ কাঙাল্‌ (কাঙ্‌ক্ষালু) বাচাল্‌ আঁঠিয়াল্‌ আড়াল মিশাল।

ল+আ

মেঘলা বাদলা পাতলা শামলা আধলা ছ্যাৎলা একলা দোকলা চাকলা।

ল+ই+আ

দীঘলিয়া (দীঘ্‌লে) আগলিয়া (আগ্‌লে) পাছলিয়া (পাছ্‌লে) ছুটলিয়া (ছুট্‌লে)।

আড়্‌

জোগাড় লাগাড় (নাগাড়) সাবাড় লেজুড় খেলোয়াড় উজাড়।

আড়্‌ +ই+আ

বাসাড়িয়া (বাসাড়ে) জোগাড়িয়া (জোগাড়ে) মজাড়িয়া (মজাড়ে) হাতাড়িয়া (হাতুড়ে, যে হাতড়াইয়া বেড়ায়) কাঠুরে হাটুরে ঘেসুড়ে