প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
মাসি। কিচ্ছু না, যতীন।
যতীন। ও কে ও। কোথা থেকে আসছ? কিছু খবর আছে?
মাসি। উনি ডাক্তার।
ডাক্তার। আপনি ওঁর কাছে থাকবেন না— আপনার সঙ্গে বড়ো বেশি কথা কন—
যতীন। না, মাসি, যেতে পাবে না।
মাসি। আচ্ছা, বাছা, আমি ঐ কোণটাতে গিয়ে বসছি।
যতীন। না, না, আমার পাশে বোসো, আমার হাত ধ’রে। ভগবান তোমার হাত থেকেই আমাকে নিজের হাতে নেবেন।
ডাক্তার। আচ্ছা বেশ। কিন্তু কথা কবেন না। আর, সেই ওষুধটা খাবার সময় হল।
যতীন। সময় হল? আবার ভোলাতে এসেছ? সময় পার হয়ে গেছে। মিথ্যে সান্ত্বনায় আমার দরকার নেই। বিদায় করে দাও, সব বিদায় করে দাও। মাসি, এখন আমার তুমি আছ— কোনো মিথ্যাকেই চাই নে। আয় ভাই হিমি, আমার পাশে বোস্।
ডাক্তার। এতটা উত্তেজনা ভালো হচ্ছে না।
যতীন। তবে আমাকে আর উত্তেজিত কোরো না।—
মাসি। শোও বাবা, একটু ঘুমোও।
যতীন। ঘুমোতে বোলো না, এখনো আমার আর-একটু জেগে থাকবার দরকার আছে। শুনতে পাচ্ছ না? আসছে। এখনই আসবে। চোখের উপর কী রকম সব ঘোর হয়ে আসছে। গোধূলিলগ্ন, গোধূলিলগ্ন আমার। বাসরঘরের দরজা খুলবে। হিমি ততক্ষণ ঐ গানটা— জীবনমরণের সীমানা পারায়ে।
জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে
বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে।
এ মোর হৃদয়ের বিজন আকাশে
তোমার মহাসন আলোতে ঢাকা সে,
গভীর কী আশায় নিবিড় পুলকে
তাহার পানে চাই দু'বাহু বাড়ায়ে।
নীরব নিশি তব চরণ নিছায়ে
আঁধার-কেশভার দিয়েছে বিছায়ে
আজি এ কোন্ গান নিখিল প্লাবিয়া
তোমার বীণা হতে আসিল নাবিয়া।
ভুবন মিলে যায় সুরের রণনে —