প্রজাপতির নির্বন্ধ

রসিক। না, খাটে নয়, বারান্দার উপর মাদুর বিছিয়ে–

শ্রীশ। বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে বসে ছুঁচে সুতো পরাচ্ছিলেন–

রসিক। হাঁ, ছুঁচে সুতো পরাচ্ছিলেন। (স্বগত) আর তো পারা যায় না।

শ্রীশ। আমি যেন ছবির মতো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি– পা দুটি ছড়ানো, মাথা নিচু, খোলা চুল মুখের উপর এসে পড়েছে– বিকেলবেলার আলো–

বিপিন। (নিকটে আসিয়া) চন্দ্রবাবু তোমার সঙ্গে তোমার সেই প্রবন্ধটা সম্বন্ধে কথা কইতে চান। (শ্রীশের প্রস্থান) রসিকবাবু–

রসিক। (স্বগত) আর কত বকব?

অন্য প্রান্তে

নির্মলা। (পূর্ণের প্রতি) আপনার শরীর আজ বুঝি তেমন ভালো নেই।

পূর্ণ। না, বেশ আছে– হাঁ, একটু ইয়ে হয়েছে বটে– বিশেষ কিছু নয়– তবু একটু ইয়ে বৈকি– তেমন বেশ– (কাশি) আপনার শরীর বেশ ভালো আছে?

নির্মলা। হাঁ।

পূর্ণ। আপনি– জিজ্ঞাসা করছিলুম যে আপনি– আপনি– আপনার ইয়ে কী রকম বোধ হয়– ঐ-যে– মিল্‌টনের আরিয়োপ্যাজিটিকা– ওটা কিনা আমাদের এম. এ. কোর্সে আছে, ওটা আপনার বেশ ইয়ে বোধ হয় না?

নির্মলা। আমি ওটা পড়ি নি।

পূর্ণ। পড়েন নি? (নিস্তব্ধ) ইয়ে হয়েছে– আপনি– এবারে কিরকম গরম পড়েছে– আমি একবার রসিকবাবু– রসিকবাবুর সঙ্গে আমার একটু দরকার আছে।

[নির্মলার নিকট হইতে প্রস্থান]


ঘরের অন্যত্র

বিপিন। রসিকবাবু, আচ্ছা, আপনার কি মনে হয়, ও গানটা তিনি বিশেষ কিছু মনে করে লিখেছেন?

রসিক। হতেও পারে। আপনি আমাকে সুদ্ধ ধোঁকা লাগিয়ে দিলেন যে! পূর্বে ওটা ভাবি নি।

বিপিন।          তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়
                       কোন্‌ পাথারে কোন্‌ পাষাণের ঘায়।
আচ্ছা, রসিকবাবু, এখানে তরী বলতে ঠিক কী বোঝাচ্ছে?

রসিক। হৃদয় বোঝাচ্ছে তার আর সন্দেহ নেই। তবে ঐ পাথারটা কোথায় আর পাষাণটা কে সেইটেই ভাববার বিষয়।

পূর্ণ। (নিকটে আসিয়া) বিপিনবাবু, মাপ করবেন– রসিকবাবুর সঙ্গে আমার একটি কথা আছে– যদি–

বিপিন। বেশ, বলুন, আমি যাচ্ছি।

[প্রস্থান]

পূর্ণ। আমার মতো নির্বোধ জগতে নেই রসিকবাবু!