মালিনী
এক জ্যোৎস্না বিস্তারিয়া সমস্ত জগৎ
কে নিল কুড়ায়ে বক্ষে—। ওই রাজপথ,
ওই গৃহশ্রেণী, ওই উদার মন্দির—
স্তব্ধচ্ছায়া তরুরাজি—দূরে নদীতীর,
বাজিছে পূজার ঘন্টা— আশ্চর্য পুলকে
পুরিছে আমার অঙ্গ, জল আসে চোখে।
কোথা হতে এনু আমি আজি জ্যোৎস্নালোকে
তোমাদের এ বিস্তীর্ণ সর্বজনলোকে।
চারুদত্ত। তুমি বিশ্বদেবী।
সোমাচার্য। ধিক্ পাপ-রসনায়!
শত ভাগে ফাটিয়া গেল না বেদনায়—
চাহিল তোমার নির্বাসন!
দেবদত্ত। চলো সবে
বিপ্রগণ, জননীরে জয়জয়রবে
রেখে আসি রাজগৃহে।
সমবেত কণ্ঠে। জয় জননীর!
জয় মা লক্ষ্মীর! জয় করুণাময়ীর!
[মালিনীকে ঘিরিয়া লইয়া সুপ্রিয় ও ক্ষেমংকর ব্যতীত সকলের প্রস্থান
ক্ষেমংকর। দূর হোক, মোহ দূর হোক! কোথা যাও
হে সুপ্রিয়?
সুপ্রিয়। ছেড়ে দাও, মোরে ছেড়ে দাও।
ক্ষেমংকর। স্থির হও। তুমিও কি, বন্ধু, অন্ধভাবে
জনস্রোতে সর্বসাথে ভেসে চলে যাবে?
সুপ্রিয়। এ কি স্বপ্ন, ক্ষেমংকর?
ক্ষেমংকর। স্বপ্নে মগ্ন ছিলে
এতক্ষণ— এখন সবলে চক্ষু মেলে
জেগে চেয়ে দেখো।
সুপ্রিয়। মিথ্যা তব স্বর্গধাম,
মিথ্যা দেবদেবী, ক্ষেমংকর— ভ্রমিলাম
বৃথা এ সংসারে এতকাল। পাই নাই
কোনো তৃপ্তি কোনো শাস্ত্রে, অন্তর সদাই