ঋণশোধ
      হাসিকান্নার ধন।
      ভেবে মরে মোর মন
   কোন্‌ সুরে আজ বাঁধিবে যন্ত্র
      কী মন্ত্র হবে গাওয়া॥


এবারে আর দেখতে পাই নি বলবার জো নেই।

প্রথম বালক। কই দেখিয়ে দাও না।

শেখর। ওই যে সাদা মেঘ ভেসে আসছে।

দ্বিতীয় বালক। হাঁ হাঁ ভেসে আসছে।

তৃতীয় বালক। হাঁ, আমিও দেখেছি।

শেখর। ঐ-যে আকাশ ভরে গেল।

প্রথম বালক। কিসে?

শেখর। কিসে! এই তো স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে আলোতে, আনন্দে। বাতাসে শিশিরের পরশ পাচ্ছ না?

দ্বিতীয় বালক। হাঁ, পাচ্ছি।

শেখর। তবে আর-কি! চক্ষু সার্থক হয়েছে, শরীর পবিত্র হয়েছে, মন প্রশান্ত হয়েছে। এসেছেন, এসেছেন, আমাদের মাঝখানেই এসেছেন। দেখছ না বেতসিনী নদীর ভাবটা। আর ধানের খেত কী রকম চঞ্চল হয়ে উঠেছে। এবার বরণের গানটা ধরিয়ে দিই। গাও।

গান
আমার নয়ন-ভুলানো এলে!
আমি কী হেরিলাম হৃদয় মেলে!

শেখর। সমস্ত বনে বনে নদীর ধারে ধারে গেয়ে আসি গে।

[ ছেলেদের লইয়া গাহিতে গাহিতে শেখরের প্রস্থান
লক্ষেশ্বরের প্রবেশ

ঠাকুরদাদা। এ কী হল! লখা গেরুয়া ধরেছে যে!

লক্ষেশ্বর। সন্ন্যাসী ঠাকুর, এবার আর কথা নেই। আমি তোমারই চেলা। এই নাও আমার গজমোতির কৌটো –এই আমার মণিমাণিক্যের পেটিকা তোমারই কাছে রইল। দেখো ঠাকুর, সাবধানে রেখো।

সন্ন্যাসী। তোমার এমন মতি কেন হল লক্ষেশ্বর?

লক্ষেশ্বর। সহজে হয় নি প্রভু! সম্রাট বিজয়াদিত্যের সৈন্য আসছে। এবার আমার ঘরে কি আর কিছু থাকবে? তোমার গায়ে তো কেউ হাত দিতে পারবে না, এ-সমস্ত তোমার কাছেই রাখলেম। তোমার চেলাকে তুমি রক্ষা করো বাবা, আমি তোমার শরণাগত।