ঋণশোধ
শিখতে চাও তো সেই সন্ন্যাসীর কাছে যাও।

প্রথম ব্যক্তি। ওরে চল্‌ রে, বেলা হয়ে গেল। সন্ন্যাসী ফন্ন্যাসী সব মিথ্যে। সে-কথা আমি তো তখনই বলেছিলেম। আজকালকার দিনে কি আর সে-রকম যোগবল আছে।

দ্বিতীয় ব্যক্তি। সে তো সত্যি। কিন্তু আমাকে যে কালুর মা বললে তার ভাগনে নিজের চক্ষে দেখে এসেছে সন্ন্যাসী একটান গাঁজা টেনে কলকেটা যেমনি উপুড় করলে অমনি তার মধ্যে থেকে এক ভাঁড় মদ আর একটা আস্ত মড়ার মাথার খুলি বেরিয়ে পড়ল!

তৃতীয় ব্যক্তি। বল কী, নিজের চক্ষে দেখেছে!

দ্বিতীয় ব্যক্তি। হাঁ রে, নিজের চক্ষে বৈকি।

তৃতীয় ব্যক্তি। আছে রে আছে, সিদ্ধপুরুষ আছে; ভাগ্যে যদি থাকে তবে তো দর্শন পাব। তা চল্-না ভাই, কোন্‌দিকে গেল একবার দেখে আসি গে।

[প্রস্থান
লক্ষেশ্বরের প্রবেশ

লক্ষেশ্বর। দেখো ঠাকুর, তোমার মন্তর যদি ফিরিয়ে না নাও তো ভালো হবে না বলছি। কী মুশকিলেই ফেলেছ, আমার হিসাবের খাতা মাটি হয়ে গেল। একবার মনটা বলে যাই সোনার পদ্মর খোঁজে, আবার বলি থাক গে ও-সব বাজে কথা। একবার মনে ভাবি, এবার বুঝি তবে ঠাকুরদাই জিতলে-বা, আবার ভাবি মরুক গে ঠাকুরদা! ঠাকুর, এ তো ভালো কথা নয়। চেলা-ধরা ব্যবসা দেখছি তোমার! কিন্তু সে হবে না, কোনোমতেই হবে না। চুপ করে হাসছ কী। আমি বলছি আমাকে পারবে না –আমার শক্ত হাড়। লক্ষেশ্বর কোনোদিন তোমার চেলাগিরিতে ভিড়বে না।

[প্রস্থান
ফুল লইয়া ছেলেদের সঙ্গে শেখরের প্রবেশ

সন্ন্যাসী। এবার অর্ঘ্য সাজানো যাক। এ যে টগর, এই বুঝি মালতী, শেফালিকাও অনেক এনেছ দেখছি। সমস্তই শুভ্র, শুভ্র, শুভ্র! এবারে সকলে মিলে শারদোৎসবের আবাহন গানটি ধরো। কবি, তুমি ধরিয়ে দাও। ঠাকুরদা, তুমিও যোগ দিয়ো।

গান
আমরা    বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা
      গেঁথেছি শেফালি মালা।
নবীন ধানের মঞ্জরী দিয়ে
      সাজিয়ে এনেছি ডালা।
এসো গো শারদলক্ষ্মী, তোমার
      শুভ্র মেঘের রথে,
এসো    নীর্মল নিল পথে,
এসো    ধৌত শ্যামল আলো-ঝলমল
      বনগিরি পর্বতে।
এসো    মুকুটে পরিয়া শ্বেত শতদল