প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
মণি আসিলে আজ কেমন করিয়া কথা আরম্ভ করিবে, যতীন তাহাই ভাবিতে লাগিল। ভাবিতে গেলে কথাগুলো কেমন অস্বাভাবিক রকম বড়ো হইয়া পড়ে— সে-সব কথা চলিবে না। যতীনের আশঙ্কা হইতে লাগিল, আজকের রাত্রের পাঁচ মিনিটও ব্যর্থ হইবে। অথচ,তাহার জীবনে এমনতরো নিরালা পাঁচ মিনিট আর কটাই বা বাকি আছে।
“একি, বউ, কোথাও যাচ্ছ না কি।”
“সীতারামপুরে যাব।”
“সে কী কথা। কার সঙ্গে যাবে।”
“অনাথ নিয়ে যাচ্ছে।”
“লক্ষী মা আমার, তুমি যেয়ো, আমি তোমাকে বারণ করব না, কিন্তু আজ নয়।”
“টিকিট কিনে গাড়ি রিজার্ভ করা হয়ে গেছে।”
“তা হোক, ও লোকসান গায়ে সইবে— তুমি কাল সক্কালেই চলে যেয়ো— আজ যেয়ো না।”
“মাসি, আমি তোমাদের তিথি বার মানি নে, আজ গেলে দোষ কী।”
“যতীন তোমাকে ডেকেছে, তোমার সঙ্গে তার একটু কথা আছে।”
“বেশ তো, এখনো একটু সময় আছে, আমি তাঁকে ব’লে আসছি।”
“না, তুমি বলতে পারবে না যে যাচ্ছ।”
“তা বেশ, কিছু বলব না, কিন্তু আমি দেরি করতে পারব না। কালই অন্নপ্রাশন— আজ যদি না যাই তো চলবে না।”
“আমি জোড়হাত করছি, বউ, আমার কথা আজ একদিনের মতো রাখো। আজ মন একটু শান্ত করে যতীনের কাছে এসে বসো— তাড়াতাড়ি কোরো না।”
“তা, কী করব বলো, গাড়ি তো আমার জন্যে বসে থাকবে না। অনাথ চলে গেছে— দশ মিনিট পরেই সে এসে আমাকে নিয়ে যাবে। এই বেলা তাঁর সঙ্গে দেখা সেরে আসি গে।”