মালিনী
তার বেশি যাহা আছে, প্রমাণ কী তার?
ক্ষেমংকর। স্থির হও ভাই। মূল ধর্ম এক বটে,
বিভিন্ন আধার। জল এক, ভিন্ন তটে
ভিন্ন জলাশয়। আমরা যে সরোবরে
মিটাই পিপাসা পিতৃপিতামহ ধ’রে
সেথা যদি অকস্মাৎ নবজলোচ্ছ্বাস
বন্যার মতন আসে, ভেঙে করে নাশ
তটভূমি তার, সে উচ্ছ্বাস হলে গত
বাঁধ-ভাঙা সরোবরে জলরাশি যত
বাহির হইয়া যাবে। তোমার অন্তরে
উৎস আছে, প্রয়োজন নাহি সরোবরে—
তাই বলে ভাগ্যহীন সর্বজনতরে
সাধারণ জলাশয় রাখিবে না তুমি—
পৈতৃক কালের বাঁধা দৃঢ় তটভূমি,
বহুদিবসের প্রেমে সতত লালিত
সৌন্দর্যের শ্যামলতা, সযত্নপালিত
পুরাতন ছায়াতরুগুলি, পিতৃধর্ম,
প্রাণপ্রিয় প্রথা, চির-আচরিত কর্ম,
চিরপরিচিত নীতি? হারায়ে চেতন
সত্যজননীর কোলে নিদ্রায় মগন
কত মূঢ় শিশু, নাহি জানে জননীরে—
তাদের চেতনা দিতে মাতার শরীরে
কোরো না আঘাত। ধৈর্য সদা রাখো সখে,
ক্ষমা করো ক্ষমাযোগ্য জনে, জ্ঞানালোকে
আপন কর্তব্য করো।
সুপ্রিয়। তব পথগামী
চিরদিন এ অধীন। রেখে দিব আমি
তব বাক্য শিরে করি। যুক্তিসূচি-’পরে
সংসার-কর্তব্যভার কভু নাই ধরে!