প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
হরতনী। চলো চলো, বীর, মরণ পণ করে বেরিয়ে পড়ি দুজনে মিলে। দেখতে পাচ্ছি যে, সামনে কী যেন কালো পাথরের ভ্রূকুটি, ভেঙে চুরমার করতে হবে। ভেঙে মাথায় যদি পড়ে পড়ুক। পথ কাটতে হবে পাহাড়ের বুক ফাটিয়ে দিয়ে। কী করতে এসেছি এখানে। ছি ছি, কেন আছি এখানে। একি অর্থহীন দিন, কী প্রাণহীন রাত্রি। কী ব্যর্থতার আবর্তন মুহূর্তে মুহূর্তে।
রুইতন। সাহস আছে তোমার, সুন্দরী?
হরতনী। আছে, আছে।
রুইতন। অজানাকে ভয় করবে না?
হরতনী। না, করব না।
রুইতন। পা যাবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে, পথ ফুরোতে চাইবে না।
হরতনী। কোন্ যুগে আমরা চলেছিলুম সেই দুর্গমে। রাত্রে ধরেছি মশাল তোমার সামনে, দিনে বয়েছি জয়ধ্বজা তোমার আগে আগে। আজ আর-একবার উঠে দাঁড়াও, ভাঙতে হবে এখানে এই অলসের বেড়া, এই নির্জীবের গণ্ডি, ঠেলে ফেলতে হবে এই-সব নিরর্থকের আবর্জনা।
রুইতন। ছিড়ে ফেলো আবরণ, টুকরো টুকরো ক’রে ছিঁড়ে ফেলো। মুক্ত হও, শুদ্ধ হও, পূর্ণ হও।
ছক্কা। ওহে পঞ্জা, কী হলো বলো দেখি।
পঞ্জা। ভারি লজ্জা হচ্ছে নিজের দিকে তাকিয়ে। মূঢ়, মূঢ়! কী করছিলি এতদিন।
ছক্কা। এতদিন পরে কেন মনে প্রশ্ন জাগছে, এ-সমস্তর অর্থ কী।
পঞ্জা। ঐ-যে দহলা পণ্ডিত আসছেন, ওঁকে জিজ্ঞাসা করি।
ছক্কা। এতকাল যে-সব ওঠাপড়া-শোওয়াবসার কোট্কেনা নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলুম তার অর্থ কী।
দহলা। চুপ।
ছক্কা-পঞ্জা। (উভয়ে) করব না চুপ।
দহলা। ভয় নেই?
ছক্কা-পঞ্জা। (উভয়ে) নেই ভয়, বলতে হবে অর্থ কী।