প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
“কিছুই তো জানবার দরকার নেই। এইটুকু জানলেই হবে ব্রজেন্দ্রবাবু এই ক্লাবের পেট্রন।”
“আমি তো ব্রজেন্দ্রবাবুকে জানি নে।”
“এইটুকু জানলেই হবে, মেট্রপলিটান ব্যাঙ্কের তিনি ডাইরেক্টর। লক্ষী আমার, জাদু আমার, একটা সই বৈ তো নয়।” ব’লে ডান হাত দিয়ে তার কাঁধ ঘিরে তার হাতটা ধরে বললে, “সই করো।”
সে স্বপ্নাবিষ্টের মতো সই করে দিলে।
কাগজটা নিয়ে নীলা যখন মুড়ছে দরোয়ান বললে, “ একাগজ আমাকে দেখতে হবে।”
নীলা বললে, “ এতো তুমি বুঝতে পারবে না।”
দরোয়ান বললে, “দরকার নেই বোঝবার।” বলে কাগজটা ছিনিয়ে নিয়ে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেললে। বললে, “দলিল বানাতে হয় বাইরে গিয়ে বানিয়ো। এখানে নয়।”
রেবতী মনে মনে হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। দরোয়ান নীলাকে বললে, “মাজি, এখন চলো তোমাকে বাড়ি পৌছিয়ে দিয়ে আসি গে।” ব’লে তাকে নিয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পরে আবার ঘরে ঢুকল পাঞ্জাবী। বললে “চার দিকে আমি দরজা বন্ধ করে রাখি, তুমি ওকে ভিতর থেকে খুলে দিয়েছ।”
এ কী সন্দেহ, কী অপমান। বার বার করে বললে, “আমি খুলি নি।”
“তবে ও কী করে ঘরে এল।”
সেও তো বটে। বিজ্ঞানী তখন সন্ধান করে বেড়াতে লাগল ঘরে ঘরে। অবশেষে দেখলে রাস্তার ধারের একটা বড়ো জানলা ভিতর থেকে আগল দেওয়া ছিল, কে সেই অগলটা দিনের বেলায় এক সময়ে খুলে রেখে গেছে।
রেবতীর যে ধূর্ত বুদ্ধি আছে এতটা শ্রদ্ধা তার প্রতি দরোয়ানজির ছিল না। বোকা মানুষ, পড়াশুনো করে এই পর্যন্ত তার তাকত। অবশেষে কপাল চাপড়ে বললে, “আওরত! এ শয়তানি বিধিদত্ত।”
যে অল্প-একটু রাত বাকি ছিল রেবতী নিজেকে বার বার করে বলালে, চায়ের নিমন্ত্রণে যাবে না।
কাক ডেকে উঠল। রেবতী চলে গেল বাড়িতে।