শৈশবসঙ্গীত
শ্মশানেতে হাসিমুখ শিশুটির প্রায়—
লইয়া মাথার খুলি আধ-পোড়া
অস্থিগুলি,
প্রমোদে ভসেমর ‘পরে ছুটিয়া বেড়ায়।
তোমরা তরুণ পাখী উড়েছ প্রভাতে
সকলে মিলিয়া এক সাথে,
এ পাখী এ শুষ্ক
শাখে
একেলা কেমনে থাকে!
সাধ— তোমাদেরি, সাথে যায়,
সাধ— তোমাদেরি গান গায়,
তরুণ কণ্ঠের সাথে এ পুরানো কণ্ঠ মোর
বাজিবে না সুরে?
নাহয় নীরবে রবঞ্চ, নাহয় কথা না কব—
শুনিব তোদেরি গান এ শ্রবণ পূরে।
এই ছিন্ন জীর্ণ পাখা বিছায়ে গগনে
যাব প্রাণপণে—
পথমাঝে শ্রান্ত যদি হই অতিশয়
তবে — দিস্ রে আশ্রয়।
পথে যে কণ্টক আছে কি ভাবিলি তার?
কত শুষ্ক জলাশয়— কত মাঠ মরুময়—
পর্ব্বতশিখরশায়ী বিস্তৃত তুষার!
কত শত বক্রগতি নদী খরস্রোত অতি,
ঘুরিছে দারুণ বেগে আবর্ত্তের জল—
হা দুর্ব্বল তুই তার কি ভাবিলি বল!
ভাবিয়া ত কাটায়েছি সারাটি জীবন,
ভবিতে পারি না আর, জীবন দুর্ব্বহ ভার—
সহিব এ পোড়া ভালে যা আছে লিখন।
যদি প্রতি পদে পদে অদৃষ্টের কাঁটা বিঁধে,
প্রতি কাঁটা তুলে তুলে কত আর চলি!
নাহয় চরণে বিঁধি মরিব গো জ্বলি।
আমি যাব গো।