শৈশবসঙ্গীত
ক্রমশঃ চেতন পাইল প্রতাপ,
    মালতী উঠিল জাগি,
চারি দিক চেয়ে বুঝিতে নারিল
    এসব কিসের লাগি।
কুমার তখন কহিলা সুধীরে
    চাহি প্রতাপের মুখে,
প্রতি কথা তার অনলের মত
    লাগিল তাহার বুকে—
“একদা গভীর বরষানিশীথে
    নাই জাগি জন প্রাণী,
সহসা সভয়ে জাগিয়া উঠিনু
    শুনিয়া কাতর বাণী।
চাহি চারি দিকে— দেখিনু বিস্ময়ে
    পিতার হৃদয় হ’তে—
শোণিত বহিছে, শয়ন তাঁহার
    ভাসিছে শোণিতস্রোতে।
কহিলেন পিতা— ‘অধিক কি কব
    আসিছে মরণবেলা,
এই শোণিতের প্রতিশোধ নিতে
    না করিবি অবহেলা।’
হৃদয় হইতে টানিয়া ছুরিকা
    দিলেন আমার হাতে,
সে অবধি এই বিষম ছুরিকা
    রাখিয়াছি সাথে সাথে।
করিনু শপথ ছুঁইয়া কৃপাণ
    ‘শুন ক্ষত্রকুলপ্রভু,
এর প্রতিশোধ তুলিব— তুলিব—
    না হবে অন্যথা কভু।’
নাম কি তাহার জানিতাম নাকো
    ভ্রমিনু সকল গ্রাম—”
অধীরে প্রতাপ উঠিল কহিয়া,