পিত্রার্কা ও লরা

স্বর্গ দিতেছেন ঢালি কী আলোক-রাশি!

            ...

চরণে হরিত-তৃণ উঠে অঙ্কুরিয়া

শত বর্ণময় ফুল উঠিছে বিকাশি!

হর্ষময় ভক্তিভরে সায়াহ্ন-বিমান

সমুদয় দীপ তার করেছে জ্বলিত,

প্রচারিতে দিশে দিশে তার যাশোগান

পাইয়া যাহার শোভা হয়েছে শোভিত।

আবার কখনো বা সন্ধ্যাকালে একাকী বিজনে বসিয়া ভগ্নহৃদয়ে নিরাশার গীতি গাহিতেছেন–

স্তব্ধ সন্ধ্যাকালে যবে পশ্চিম আকাশে

রবি অস্তাচলগামী পড়েছে ঢলিয়া,

বৃদ্ধ যাত্রী কোন্‌ এক অজ্ঞাত প্রবাসে

শ্রান্ত-পদক্ষেপে একা যেতেছে চলিয়া।

তবু যবে ফুরাইয়া যাবে শ্রম তার,

তখন গভীর ঘুমে মজিয়া বিজনে

ভুলে যাবে দিবসের বিষাদের ভার,

যত ক্লেশ সহিয়াছি সুদূর-ভ্রমণে!

কিন্তু হায় প্রভাতের কিরণের সনে

যে জ্বালা জাগিয়া উঠে হৃদয়ে আমার

রবি যবে ঢলি পড়ে পশ্চিম গগনে

দ্বিগুণ সে জ্বালা হৃদি করে ছারখার!

প্রজ্বলন্ত রথচক্র নিম্ন পানে যবে

লয়ে যান সূর্যদেব, অসহায় ভবে

রাখি রাত্রি-কোলে, যার দীর্ঘীকৃত ছায়া

প্রত্যেক গিরিশিখর সমুন্নত-কায়া

উপত্যকা-‘পরে দেয় বিস্তারিত করি;

তখন কৃষক হল লয়ে স্কন্ধোপরি,

ধরি কোন্‌ গ্রাম্যগীত অশিক্ষিত স্বরে

চিন্তা ঢালি দেয় তার বন্য-বায়ু-‘পরে!

            ...

চিরকাল সুখে তারা করুক যাপন!

আমার আঁধার দিনে হর্ষের কিরণ