আকাশপ্রদীপ

                 বিশ্বের রহস্যলোকে করে অন্বেষণ।

                       সেই রহস্যই নারী —

           নাম দিয়ে ভাব দিয়ে মনগড়া মূর্তি রচে তারি ;

                 যাহা পায় তার সাথে যাহা নাহি পায়

                             তাহারে মিলায়।

                 উপমা তুলনা যত ভিড় করে আসে

                            ছন্দের কেন্দ্রের চারি পাশে,

                 কুমোরের ঘুরখাওয়া চাকার সংবেগে

           যেমন বিচিত্র রূপ উঠে জেগে জেগে।

                 বসন্তে নাগকেশরের সুগন্ধে মাতাল

           বিশ্বের জাদুর মঞ্চে রচে সে আপন ইন্দ্রজাল।

                 বনতলে মর্মরিয়া কাঁপে সোনাঝুরি ;

           চাঁদের আলোর পথে খেলা করে ছায়ার চাতুরী ;

                       গভীর চৈতন্যলোকে

           রাঙা নিমন্ত্রণলিপি দেয় লিখি কিংশুকে অশোকে ;

                 হাওয়ায় বুলায় দেহে অনামীর অদৃশ্য উত্তরী,

                       শিরায় সেতার উঠে গুঞ্জরি গুঞ্জরি।

 

           এই যারে মায়ারথে পুরুষের চিত্ত ডেকে আনে

                 সে কি নিজে সত্য করে জানে

                            সত্য মিথ্যা আপনার,

           কোথা হতে আসে মন্ত্র এই সাধনার।

                       রক্তস্রোত-আন্দোলনে জেগে

                 ধ্বনি উচ্ছ্বসিয়া উঠে অর্থহীন বেগে ;

           প্রচ্ছন্ন নিকুঞ্জ হতে অকস্মাৎ ঝঞ্ঝায় আহত

                       ছিন্ন মঞ্জরীর মতো

                  নাম এল ঘূর্ণিবায়ে ঘুরি ঘুরি,

           চাঁপার গন্ধের সাথে অন্তরেতে ছড়াল মাধুরী।