সোনার তরী

শুধু চারি দিকে প্রাচীন পাষাণ

জগৎ-ব্যাপ্ত সমাধিসমান

গ্রাসিয়া রেখেছে অযুত পরান,

         রয়েছে অটল গরবে।

 

সংসারস্রোত জাহ্নবীসম

         বহু দূরে গেছে সরিয়া।

এ শুধু ঊষর বালুকাধূসর

         মরুরূপে আছে মরিয়া।

নাহি কোনো গতি, নাহি কোনো গান,

নাহি কোনো কাজ, নাহি কোনো প্রাণ,

বসে আছে এক মহানির্বাণ,

         আঁধার-মুকুট পরিয়া।

 

হৃদয় আমার ক্রন্দন করে

         মানব-হৃদয়ে মিশিতে —

নিখিলের সাথে মহা রাজপথে

         চলিতে দিবস-নিশীথে।

আজন্মকাল পড়ে আছি মৃত

জড়তার মাঝে হয়ে পরাজিত,

একটি বিন্দু জীবন-অমৃত

         কে গো দিবে এই তৃষিতে?

 

জগৎ-মাতানো সংগীততানে

         কে দিবে এদের নাচায়ে!

জগতের প্রাণ করাইয়া পান

         কে দিবে এদের বাঁচায়ে!

ছিঁড়িয়া ফেলিবে জাতিজালপাশ,

মুক্ত হৃদয়ে লাগিবে বাতাস,

ঘুচায়ে ফেলিয়া মিথ্যা তরাস

         ভাঙিবে জীর্ণ খাঁচা এ।