সোনার তরী

                ঢাকিছে নীরব স্নেহে।

         কাছে আসি শিশু মাগিছে আদর

                কণ্ঠ জড়ায়ে ধরি,

         পাশে আসি যুবা চাহিছে তাহারে

                লইতে বন্ধু করি।

         এই পথে গৃহে কত আনাগোনা,

                কত ভালোবাসাবাসি,

         সংসারসুখ কাছে কাছে তার

                কত আসে যায় ভাসি,

         মুখ ফিরাইয়া সে রহে বসিয়া,

                কহে সে নয়নজলে,

        ‘ তোমাদের আমি চাহি না কারেও,

                শশী চাই করতলে। '

 

শশী যেথা ছিল সেথাই রহিল,

                সেও ব ' সে এক ঠাঁই।

         অবশেষে যবে জীবনের দিন

                আর বেশি বাকি নাই,

         এমন সময়ে সহসা কী ভাবি

                চাহিল সে মুখ ফিরে

         দেখিল ধরণী শ্যামল মধুর

                সুনীল সিন্ধুতীরে।

         সোনার ক্ষেত্রে কৃষাণ বসিয়া

                কাটিতেছে পাকা ধান,

         ছোটো ছোটো তরী পাল তুলে যায়,

                মাঝি বসে গায় গান।

         দূরে মন্দিরে বাজিছে কাঁসর,

                বধূরা চলেছে ঘাটে,

         মেঠো পথ দিয়ে গৃহস্থ জন

                আসিছে গ্রামের হাটে।

         নিশ্বাস ফেলি রহে আঁখি মেলি,

                কহে ম্রিয়মাণ মন,