পলাতকা

          দুরন্ত তার দুষ্টুমিটি তেমনি বিষম বলে

               দিনের মধ্যে সহস্রবার করে

           বাপের বক্ষ দিত অসীম চঞ্চলতায় ভরে।

                বয়সের এই পর্দা-ঘেরা শান্ত ঘরে

আমার মধ্যে একটি সে কোন্‌ চির-বালক লুকিয়ে খেলা করে ;

                   বিজুর হাতে পেলে নাড়া

                     সেই যে দিত সাড়া।

          সমান-বয়স ছিল আমার কোন্‌খানে তার সনে,

          সেইখানে তার সাথি ছিলেম সকল প্রাণে মনে।

          আমার বক্ষ সেইখানে এক-তালে,

     উঠত বেজে তার ই খেলার অশান্ত গোলমালে।

বৃষ্টিধারা সাথে নিয়ে মোদের দ্বারে ঝড় দিত যেই হানা

          কাটিয়ে দিয়ে বিজুর মায়ের মানা

              অট্ট হেসে আমরা দোঁহে

      মাঠের মধ্যে ছুটে গেছি উদ্দাম বিদ্রোহে।

                   পাকা আমের কালে

               তারে নিয়ে বসে গাছের ডালে

     দুপুরবেলায় খেয়েছি আম করে কাড়াকাড়ি —

তাই দেখে সব পাড়ার লোকে বলে গেছে, “ বিষম বাড়াবাড়ি। ”

                  বারে বারে

আমার লেখার ব্যাঘাত হত, বিজুর মা তাই রেগে বলত তারে

          “ দেখিস নে তোর বাবা আছেন কাজে?”

                   বিজু তখন লাজে

বাইরে চলে যেত। আমার দ্বিগুণ ব্যাঘাত হত লেখাপড়ায় ;

     মনে হত, “ টেবিলখানা কেউ কেন না নড়ায়। ”

 

 

                   ভোর না হতে রাতি

সেদিন যখন বিজু গেল ছেড়ে খেলা, ছেড়ে খেলার সাথি,

          মনে হল এতদিনে বুড়ো - বয়সখানা

                    পুরল ষোলো - আনা।

     কাজের ব্যাঘাত হবে না আর কোনোমতে,