চিত্রাঙ্গদা
            কোথা সে রমণী বীর্যবতী।
               কোষবিমুক্ত কৃপাণলতা–
                 দারুণ সে, সুন্দর সে
                     উদ্যত বজ্রের রুদ্ররসে–
          নহে সে ভোগীর লোচনলোভা,
                 ক্ষত্রিয়বাহুর ভীষণ শোভা॥ স্বরলিপি
  সখীগণ।  নারীর ললিত লোভন লীলায় এখনি কেন এ ক্লান্তি।
             এখনি কি, সখা, খেলা হল অবসান।
          যে মধুর রসে ছিলে বিহ্বল
                   সে কি মধুমাখা ভ্রান্তি–
                     সে কি স্বপ্নের দান,
                 সে কি সত্যের অপমান।
          দূর দুরাশায় হৃদয় ভরিছ,
                 কঠিন প্রেমের প্রতিমা গড়িছ,
          কী মনে ভাবিয়া নারীতে করিছ পৌরুষসন্ধান।
                 এও কি মায়ার দান।
                 সহসা মন্ত্রবলে
          নমনীয় এই কমনীয়তারে
                 যদি আমাদের সখী একেবারে
          পরের বসন-সমান ছিন্ন করি ফেলে ধূলিতলে,
              সবে না সবে না সে নৈরাশ্য–
                ভাগ্যের সেই অট্টহাস্য
          জানি জানি, সখা, ক্ষুব্ধ করিবে লুব্ধ পুরুষপ্রাণ–
                   হানিবে নিঠুর বাণ॥ স্বরলিপি
   অর্জুন।  যদি মিলে দেখা তবে তারি সাথে
          ছুটে যাব আমি আর্তত্রাণে।
            ভোগের আবেশ হতে
              ঝাঁপ দিব যুদ্ধস্রোতে।
          আজি মোর চঞ্চল রক্তের মাঝে
            ঝন নন ঝন নন ঝঞ্ঝনা বাজে– বাজে– বাজে।
              চিত্রাঙ্গদা রাজকুমারী
          একাধারে মিলিত পুরুষ নারী॥ স্বরলিপি