বৈকুন্ঠের খাতা
গেছে।

কেদার। তবে আপনাকে, ওর নাম কী, খুলে বলি, অবিনাশ আপনার লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে যায়।

বৈকুণ্ঠ। অবু! সে তো এ-সব বই পড়ে না।

কেদার। পড়ে না, ওর নাম কী, বিক্রি করে।

বৈকুণ্ঠ। বিক্রি করে!

কেদার। নতুন প্রণয়—নতুন শখ—ওর নাম কী, খরচ বেশি। আমি তাকে বলি অবু, কী বলে ভালো, মাইনের টাকা থেকে কিছু কিছু কেটে নিয়ে দাদাকে দিলেই হয়। অবু বলে, লজ্জা করে।

বৈকুণ্ঠ। ছেলেমানুষ! প্রণয়ের খাতিরও এড়াতে পারে না, আবার দাদার সম্মানটিও রাখতে হবে।

কেদার। ওর নাম কী, আমি আপনার বইখানি উদ্ধার করে আনব—

বৈকুণ্ঠ। তা, যত টাকা লাগে—আপনার কাছে আমি চিরঋণী হয়ে থাকব।

কেদার। (স্বগত) বাজারে তো তার চার পয়সা দামও হল না, এ আরো হল ভালো—ধর্মও রইল কিছু পাওয়াও গেল।

[ প্রস্থান
অবিনাশের প্রবেশ

অবিনাশ। দাদা!

বৈকুণ্ঠ। কী ভাই অবু!

অবিনাশ। আমার কিছু টাকার দরকার হয়েছে—

বৈকুণ্ঠ। তাতে লজ্জা কী অবু! আমি বলছি কী, এখন থেকে তোমার টাকা তুমিই রাখো-না ভাই—আমি বুড়ো হয়ে গেলুম, হারিয়েই ফেলি কি ভুলেই যাই, আমার কি মনের ঠিক আছে।

অবিনাশ। এ আবার কী নতুন কথা হল দাদা!

বৈকুণ্ঠ। নতুন কথা নয় ভাই। তুমি বিয়েথাওয়া করে সংসারী হয়েছ, আমি তো সন্ন্যাসী মানুষ—

অবিনাশ। তুমিই তো, দাদা, আমার বিয়ে দিয়ে দিলে—তাতেই যদি পর হয়ে থাকি, তবে থাক্‌, টাকাকড়ির কথা আর আমি বলব না।

[ প্রস্থান

বৈকুণ্ঠ। আহা, অবু, রাগ কোরো না। শোনো আমার কথাটা, আহা শুনে যাও—

‘ভাবতে পারি নে পরের ভাবনা’ গাহিতে গাহিতে
বিপিনের প্রবেশ

বৈকুণ্ঠ। এই-যে বেণীবাবু—

বিপিন। আমার নাম বিপিনবিহারী।

বৈকুণ্ঠ। হাঁ হাঁ, বিপিনবাবু। আপনার বিছানায় ঐ-যে বইগুলি রেখেছেন ওগুলি পড়ছেন বুঝি?

বিপিন। নাঃ, পড়ি নে, বাজাই।

বৈকুণ্ঠ। বাজান? তা আপনাকে যদি বাঁয়া তবলা কি মৃদঙ্গ—