অচলায়তন
ওদের পাষাণের বেড়া এখনো শতধা বিদীর্ণ হয়ে গেল না।

পঞ্চক। প্রভু, আমরা তাঁকে সকলে মিলে কত কাঁদালুম তবু তাড়াতে পারলুম না। তাঁকে যে-ঘরে বসালুম সে-ঘরের আলো সব নিবিয়ে দিলুম—তাঁকে আর দেখতে পাই নে—তবু তিনি সেখানে বসে আছেন।

গান

সকল জনম ভ'রে

     ও মোর দরদিয়া—
কাঁদি কাঁদাই তোরে

     ও মোর দরদিয়া!

     আছ হৃদয়মাঝে,

সেথা      কতই ব্যথা বাজে

ওগো      এ কি তোমায় সাজে

             ও মোর দরদিয়া!

এই      দুয়ার-দেওয়া ঘরে

কভু      আঁধার নাহি সরে,

তবু       আছ তারি পরে

              ও মোর দরদিয়া!

সেথা       আসন হয় নি পাতা,

সেথা      মালা হয় নি গাঁথা;

আমার      লজ্জাতে হেঁট মাথা

             ও মোর দরদিয়া।

 

উপাচার্যের প্রবেশ

আচার্য। একি সূতসোম! আমার কী সৌভাগ্য। কিন্তু তুমি এখানে এলে যে?

উপাচার্য। আর কোথা যাব বলো। তুমি চলে আসামাত্র অচলায়তন যে কী কঠিন হয়ে উঠল, কী শুকিয়ে গেল সে আমি বলতে পারি নে। এখন এসো একবার কোলাকুলি করি।

আচার্য। আমাকে ছুঁয়ো না—কাল থেকে ঘটশুদ্ধি ভূতশুদ্ধি কিছুই করি নি।

উপাচার্য। তা হোক তা হোক। তোমারও আলিঙ্গন যদি অশুচি হয় তবে সেই অশুচিতার পুণ্যদীক্ষাই আমাকে দাও।

কোলাকুলি

পঞ্চক। উপাচার্যদেব, অচলায়তনে তোমার কাছে যত অপরাধ করেছি আজ এই দর্ভকপাড়ায় সে-সমস্ত ক্ষমা করে নাও।

উপাচার্য। এসো বৎস, এসো।