অচলায়তন

মহাপঞ্চক। কোনো ভয় করবেন না।


দর্ভকপল্লী

পঞ্চক। নির্বাসন, আমার নির্বাসন রে! বেঁচে গেছি, বেঁচে গেছি। কিন্তু এখনও মনটাকে তার খোলসের ভিতর থেকে টেনে বের করতে পারছি নে কেন!

গান

এই      মৌমাছিদের ঘরছাড়া কে করেছে রে।

তোরা আমায় বলে দে ভাই বলে দে রে।

ফুলের গোপন পরানমাঝে

নীরব সুরে বাঁশি বাজে—

ওদের     সেই বাঁশিতে কেমনে মন হরেছে রে।

যে মধুটি লুকিয়ে আছে

দেয় না ধরা কারো কাছে

ওদের       সেই মধুতে কেমনে মন ভরেছে রে।

দর্ভকদলের প্রবেশ

প্রথম দর্ভক। দাদাঠাকুর।

পঞ্চক। ও কী ও। দাদাঠাকুর বলছিস কাকে? আমার গায়ে দাদাঠাকুর নাম লেখা হয়ে গেছে নাকি?

প্রথম দর্ভক। তোমাদের কী খেতে দেব ঠাকুর?

পঞ্চক। তোদের যা আছে তাই আমরা খাব।

দ্বিতীয় দর্ভক। আমাদের খাবার? সে কি হয়? সে যে সব ছোঁওয়া হয়ে গেছে।

পঞ্চক। সেজন্যে ভাবিস নে ভাই। পেটের খিদে যে আগুন, সে কারও ছোঁওয়া মানে না, সবই পবিত্র করে। ওরে, তোরা সকালবেলায় করিস কী বল্‌ তো। ষড়ক্ষরিত দিয়ে একবার ঘটশুদ্ধি করে নিবি নে?

তৃতীয় দর্ভক। ঠাকুর, আমরা নীচ দর্ভকজাত—আমরা ওসব কিছুই জানি নে। আজ কতপুরুষ ধরে এখানে বাস করে আসছি, কোনোদিন তো তোমাদের পায়ের ধুলা পড়ে নি। আজ তোমাদের মন্ত্র পড়ে আমাদের বাপ পিতামহকে উদ্ধার করে দাও ঠাকুর।

পঞ্চক। সর্বনাশ! বলিস কী! এখানেও মন্ত্র পড়তে হবে! তাহলে নির্বাসনের দরকার কী ছিল? তা, সকালবেলা তোরা কী করিস বল্‌ তো?

প্রথম দর্ভক। আমরা শাস্ত্র জানি নে, আমরা নামগান করি।

পঞ্চক। সে কী রকম ব্যাপার? শোনা দেখি একটা।

দ্বিতীয় দর্ভক। ঠাকুর, সে শুনে তুমি হাসবে।

পঞ্চক। আমিই তো ভাই এতদিন লোক হাসিয়ে আসছি—তোরা আমাকেও হাসাবি! শুনেও মন খুশি হয়। আমি যে কী