অরূপরতন

বিক্রম। তবে কেন বলে বেড়াচ্ছিলে তুমিই এখানকার রাজা?

সুবর্ণ। আমি রাজা না, রাজা না। (মাটিতে পড়িয়া জোড়করে) কোথায় আমার রাজা, রক্ষা করো। আমি পাপিষ্ঠ, আমাকে রক্ষা করো। আমি বিদ্রোহী, আমাকে দণ্ড দাও, কিন্তু রক্ষা করো।

বিক্রম। অমন শূন্যতার কাছে চীৎকরে করে লাভ কী? ততক্ষণ পথ বের করবার চেষ্টা করা যাক।

সুবর্ণ। আমি এইখানেই পড়ে রইলুম – আমার যা হবার তাই হবে।

বিক্রম। সে হবে না। পুড়ে মরি তো একলা মরব না – তোমাকে সঙ্গী নেব।

নেপথ্যে হইতে। রক্ষা করো, রক্ষা করো! চারিদিকে আগুন!

বিক্রম। মূঢ়, ওঠো, আর দেরি না।

সুদর্শনার প্রবেশ

সুদর্শনা। রাজা, রক্ষা করো। আগুনে ঘিরেছে।

সুবর্ণ। কোথায় রাজা? আমি রাজা নই।

সুদর্শনা। তুমি রাজা নও?

সুবর্ণ। আমি ভণ্ড আমি পাষণ্ড! (মুকুট মাটিতে ফেলিয়া) আমার ছলনা ধূলিসাৎ হউক।

[রাজা বিক্রমের সহিত প্রস্থান


সুদর্শনা। রাজা নয়? এ রাজা নয়? তবে ভগবান হুতাশন, দগ্ধ করো আমাকে; আমি তোমারই হাতে আত্মসমর্পণ করব।

নেপথ্যে। ওদিকে কোথায় যাও। তোমার অন্তঃপুরের চারি দিকে আগুন ধরে গেছে, ওর মধ্যে প্রবেশ করো না।


সুরঙ্গমার প্রবেশ

সুরঙ্গমা। এসো।

সুদর্শনা। কোথায় যাব?

সুরঙ্গমা। ঐ আগুনের ভিতর দিয়েই চলো।

সুদর্শনা। সে কী কথা?

সুরঙ্গমা। আগুনকে বিশ্বাস করো, যাকে বিশ্বাস করেছিলে, এ তার চেয়ে ভালো।

সুদর্শনা। রাজা কোথায়?

সুরঙ্গমা। রাজাই আছেন ওই আগুনের মধ্যে। তিনি সোনাকে পুড়িয়ে নেবেন।

সুদর্শনা। সত্যি বলছিস?

সুরঙ্গমা। আমি তোমাকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি, আগুনের ভিতরকার রাস্তা জানি।

[উভয়ের প্রস্থান


গানের দলের প্রবেশ
গান
       আগুনে হল আগুনময়।
           জয় আগুনের জয়।
       মিথ্যা যত হৃদয় জুড়ে