অরূপরতন
   তোমার রঙে রঙে রাঙা হল।
   যেমন রাঙাবরন তোমার চরণ
           তার সনে আর ভেদ না র’ল॥
   রাঙা হল বসন ভূষণ,
   রাঙা হল শয়ন স্বপন,
মন         হল কেমন দেখ্ রে,যেমন
                     রাঙা কমল টলোমলো!


ঠাকুরদা। বেশ ভাই, বেশ – খুব খেলা জমেছিল?

বাউল। খুব খুব। সব লালে লাল। কেবল আকাশের চাঁদটাই ফাঁকি দিয়েছে – সাদাই রয়ে গেল।

ঠাকুরদা। বাইরে থেকে দেখাচ্ছে যেন বড়ো ভালোমানুষ। ওর সাদা চাদরটা খুলে দেখতিস যদি তাহলে ওর বিদ্যে ধরা পড়ত। চুপি চুপি ও যে আজ কত রং ছড়িয়েছে এখানে দাঁড়িয়ে সব দেখেছি। অথচ ও নিজে কি এমনি সাদাই থেকে যাবে?


গান
আহা     তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা
             প্রিয় আমার ওগো প্রিয়।
বড়ো      উতলা আজ পরান আমার
             খেলাতে হার মানবে কি ও?
কেবল     তুমিই কি গো এমনি ভাবে
             রাঙিয়ে মোরে পালিয়ে যাবে?
তুমি      সাধ করে নাথ ধরা দিয়ে
             আমারও রং বক্ষে নিয়ো—
এই      হৃৎকমলের রাঙা রেণু
             রাঙাবে ওই উত্তরীয়।
[সকলের প্রস্থান।
সুবর্ণ ও রাজা বিক্রমবাহুর প্রবেশ

সুবর্ণ। এ কী কাণ্ড করেছ রাজা বিক্রমবাহু?

বিক্রম। আমি কেবল এই প্রাসাদের কাছটাতেই আগুন ধরাতে চেয়েছিলুম, সে আগুন যে এত শীঘ্র এমন চারি দিক ধরে উঠবে সে আমি মনেও করি নি। এ বাগান থেকে বেরোবার পথ কোথায় শীঘ্র বলে দাও।

সুবর্ণ। পথ কোথায় আমি তো কিছুই জানি নে। যারা আমাদের এখানে এনেছিল তাদের একজনকেও দেখছি নে।

বিক্রম। তুমি তো এদেশেরই লোক – পথ নিশ্চয় জান।

সুবর্ণ। অন্তঃপুরের বাগানে কোনোদিনই প্রবেশ করি নি।

বিক্রম। সে আমি বুঝি নে, তোমাকে পথ বলতেই হবে, নইলে তোমাকে দু-টুকরো করে কেটে ফেলব।

সুবর্ণ। তাতে প্রাণ বেরোবে, পথ বেরোবার কোনো উপায় হবে না।