ঋণশোধ

ঠাকুরদাদা। তোমাকে চিনে নিয়েছি। তুমি মন ভোলাতে জান।

শেখর। আমার নিজের মন ভুলেছে বলেই আমি মন ভুলিয়ে বেড়াই।

প্রথম বালক। তার মানে কী পরদেশী? কেমন করে মন ভোলে?

শেখর।

গান
কেন যে মন ভোলে আমার মন জানে না।
তারে   মানা করে কে, আমার মন মানে না।
        কেউ বোঝে না তারে,
সে যে   বোঝে না আপনারে,
সবাই   লজ্জা দিয়ে যায়, সে তো কানে আনে না।
        তার খেয়া গেল পারে
        সে যে রইল নদীর ধারে।
কাজ করে সব সারা     (ওই) এগিয়ে গেল কারা
     আনমনা মন সেদিকপানে দৃষ্টি হানে না।


ঠাকুরদাদা। তোমাকে ছাড়ছি নে ভাই, নিজের মনের কথা তোমার মুখ থেকে শুনে নেব।

ছেলেরা। আমরা তোমাকে ছাড়ব না।

শেখর। তোমরা ছাড়লে আমিই বুঝি তোমাদের ছাড়ব মনে করছ? একবার চার দিকটা ঘুরে আসছি -কোথায় এলুম একবার বুঝে নিই।

[ প্রস্থান

প্রথম বালক। ঠাকুরদা, ঐ দেখো, ঐ দেখো সন্ন্যাসী আসছে।

দ্বিতীয় বালক। বেশ হয়েছে, বেশ হয়েছে, আমরা সন্ন্যাসীকে নিয়ে খেলব। আমরা সব চেলা সাজব।

তৃতীয় বালক। আমরা ওঁর সঙ্গে বেরিয়ে যাব, কোন্ দেশে চলে যাব কেউ খুঁজে পাবে না।

ঠাকুরদাদা। আরে চুপ, চুপ।

সকলে। সন্ন্যাসী ঠাকুর, সন্ন্যাসী ঠাকুর।

ঠাকুরদাদা। আরে থাম্‌ থাম্‌। ঠাকুর রাগ করবে।

সন্ন্যাসীর প্রবেশ

বালকগণ। সন্ন্যাসী ঠাকুর, তুমি কি আমাদের উপর রাগ করবে? আজ আমরা সব তোমার চেলা হব।

সন্ন্যাসী। হা হা হা হা! এ তো খুব ভালো কথা। তার পরে আবার তোমরা সব শিশু-সন্ন্যাসী সেজো, আমি তোমাদের বুড়ো চেলা সাজব। এ বেশ খেলা, এ চমৎকার খেলা।

ঠাকুরদাদা। প্রণাম হই। আপনি কে?