ঋণশোধ

শেখর। ঠিক বলেছ।

দ্বিতীয় বালক। তুমি কী কর?

শেখর। আমি সব জায়গায়ই দেশ খুঁজে বেড়াই।

তৃতীয় বালক। তার মানে কী, পরদেশী?

শেখর। দেখো-না, শরৎকালে রাজারা দেশ জয় করতে বেরোয় –তার আসল কারণ পৃথিবীর অধীশ্বর হলেও এখনো তারা দেশ খুঁজে পায় নি, কোনো কালে পাবেও না।

প্রথম বালক। কেন পাবে না?

শেখর। তারা নির্বোধ, মনে করে লড়াই করে দেশ পাওয়া যায়। বিনা লড়াইয়ে যারা জয় করতে জানে তারাই আপন দেশ খুঁজে পায়।

দ্বিতীয় বালক। তুমি খুঁজে পেয়েছ?

শেখর। বড়ো শক্ত। কেননা, মানুষে লুকিয়ে রাখে। ঐ বাড়িটার কাছে সন্ধানে গিয়েছিলেম, একটা মানুষ ছুটে এসে বললে, এ তোমার জায়গা নয়, এ আমার।

সকলে। ও বুঝেছি। লক্ষ্মীপেঁচা।

প্রথম বালক। তার কোটরের কাছে গেলেই সে ঠোকর দিতে আসে।

দ্বিতীয় বালক। কিন্তু পরদেশী, আমাদের কাছে তোমার কোনো ভয় নেই।

শেখর। বাবা, তাহলে তোমাদের মধ্যেই আমার দেশ খুঁজে পাব।


গান
আমারে ডাক দিল কে ভিতর পানে–
ওরা যে ডাকতে জানে।
     আশ্বিনে ওই শিউলি শাখে
     মৌমাছিরে যেমন ডাকে
       প্রভাতে সৌরভের গানে।
ঘর-ছাড়া আজ ঘর পেল যে,
আপন মনে রইল মজে।
     হাওয়ায় হাওয়ায় কেমন করে
     খবর যে তার পৌঁছোল রে,
        ঘর-ছাড়া ওই মেঘের কানে।


ঠাকুরদাদা। ও ভাই, আমার জায়গা তোমাকে ছেড়ে দিলেম।

শেখর। ছাড়তে হবে কেন? দুজনেরই জায়গা আছে।