রাজা ও রানী

কুমারসেন।  চলো, যাই চলো। ইলা, কোথা আছ ইলা!

ফিরে গেনু দুয়ারে আসিয়া। দুর্ভাগ্যের

দিনে জগতের চারিদিকে রুদ্ধ হয়

আনন্দের দ্বার। প্রিয়ে, হতভাগ্য আমি,

তাই ব'লে নহি অবিশ্বাসী।— চলো, যাই।


চতুর্থ দৃশ্য
ত্রিচূড়। অন্তঃপুর
ইলা ও সখীগণ

     ইলা।  মিছে কথা, মিছে কথা! তোরা চুপ কর্।

আমি তার মন জানি। সখী, ভালো করে

বেঁধে দে কবরী মোর ফুলমালা দিয়ে।

নিয়ে আয় সেই নীলাম্বর। স্বর্ণথালে

আন্‌ তুলে শুভ্র ফুল্ল মালতীর ফুল।

নির্ঝরিণীতীরে ওই বকুলের তলা

ভালো সে বাসিত; ওইখানে শিলাতলে

পেতে দে আসনখানি। এমনি যতনে

প্রতিদিন করি সাজ, এমনি করিয়া

প্রতিদিন থাকি বসে, কে জানে কখন

সহসা আসিবে ফিরে প্রিয়তম মোর।

এসেছিল আমাদের মিলন দেখিতে

পরে পরে দুটি পূর্ণিমার রাত, অস্ত

গেছে নিরাশ হইয়া। মনে স্থির জানি

এবার পূর্ণিমা-নিশি হবে না নিষ্ফল।

আসিবে সে দেখা দিতে। না'ই যদি আসে

তোদের কী! আমারে সে ভুলে যায় যদি

আমিই সে বুঝিব অন্তরে। কেনই বা

না ভুলিবে, কী আছে আমার! ভুলে যদি

সুখী হয় সেই ভালো — ভালোবেসে যদি

সুখী হয় সেও ভালো। তোরা সখী, মিছে