মালঞ্চ

রোশনি। চিঠি।

আদিত্যের হাতে প্রদান

নীরজা। ও কী, ও কার চিঠি?

আদিত্য। (একটু চুপ করে থেকে) টেলিগ্রাম এসেছে!

নীরজা। কিসের টেলিগ্রাম?

আদিত্য। মেয়াদ শেষ হবার আগেই সরলা ছাড়া পেয়েছে।

নীরজা। ছাড়া পেয়েছে? দেখি। (টেলিগ্রাম হাতে নিয়ে) তা হলে তো আর দেরি নেই। এখনি আসবে।

ওকে নিশ্চয় এনো আমার কাছে। (বলতে বলতে মূর্ছার উপক্রম)

আদিত্য। ও কী! কী হল নীরু! নার্স, ডাক্তার আছেন?

নেপথ্য হতে

নার্স। আছেন বাইরের ঘরে।

আদিত্য। এখনি নিয়ে এসো, এই যে ডাক্তার।

ডাক্তারের প্রবেশ

এইমাত্র বেশ সহজ শরীরে কথা বলছিল, বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে গেল।


ডাক্তার নীরজার নাড়ী দেখে চুপ করে রইল। কিছুক্ষণ পরে রোগী চোখ মেলেই বললে—

নীরজা। ডাক্তার, আমাকে বাঁচাতেই হবে। সরলাকে না দেখে যেতে পারব না, ভালো হবে না তাতে। আশীর্বাদ করব তাকে। শেষ আশীর্বাদ।

আবার এল চোখ বুজে, হাতের মুঠো শক্ত হল, বলে উঠল—

ঠাকুরপো, কথা রাখব, কৃপণের মতো মরব না।


এক-একবার চেতনা ক্ষীণ হয়ে জগৎ ঝাপসা হয়ে আসছে, আবার নিবু-নিবু প্রদীপের মতো জীবন-শিখা উঠছে জ্বলে। স্বামীকে থেকে থেকে জিজ্ঞাসা করছে—

কখন আসবে সরলা?

(থেকে থেকে ডেকে ওঠে) রোশনি।

রোশনি। কী খোঁখী?

নীরজা। ঠাকুরপোকে ডেকে দে এক্ষুনি।

(এক-একবার আপনি বলে ওঠে—) কী হবে আমার, ঠাকুরপো! দেব দেব দেব, সব দেব।