নাট্যগীতি
১১
         সখী,    ভাবনা কাহারে বলে।   সখী,    যাতনা কাহারে বলে।
         তোমরা যে বলো দিবস-রজনী    ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’—
         সখী,    ভালোবাসা কারে কয়!  সে কি   কেবলই যাতনাময়।
         সে কি   কেবলই চোখের জল ?   সে কি   কেবলই দুখের শ্বাস?
         লোকে তবে করে   কী সুখেরই তরে   এমন দুখের আশ।
                   আমার চোখে তো সকলই শোভন,
         সকলই নবীন, সকলই বিমল,    সুনীল আকাশ, শ্যামল কানন,
         বিশদ জোছনা, কুসুম কোমল— সকলই আমার মতো।
         তারা  কেবলই হাসে, কেবলই গায়,   হাসিয়া খেলিয়া মরিতে চায়—
         না জানে বেদন, না জানে রোদন,   না জানে সাধের যাতনা যত।
         ফুল সে হাসিতে হাসিতে ঝরে,   জোছনা হাসিয়া মিলায়ে যায়,
         হাসিতে হাসিতে আলোকসাগরে   আকাশের তারা তেয়াগে কায়।
         আমার মতন সুখী কে আছে।   আয় সখী, আয় আমার কাছে—
         সুখী হৃদয়ের সুখের গান   শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রাণ।
         প্রতিদিন যদি কাঁদিবি কেবল    একদিন নয় হাসিবি তোরা—
         একদিন নয় বিষাদ ভুলিয়া    সকলে মিলিয়া গাহিব মোরা॥