বিসর্জন

নিয়ে, আজ রক্ত নয়, হিংসা নয়।

গুণবতী।                               ভিক্ষা

রাখো নাথ!

গোবিন্দমাণিক্য।                   বলো দেবী!

গুণবতী।                          হোয়ো না পাষাণ।

রাজগর্ব ছেড়ে দাও। দেবতার কাছে

পরাভব না মানিতে চাও যদি, তবু

আমার যন্ত্রণা দেখে গলুক হৃদয়।

তুমি তো নিষ্ঠুর কভু ছিলে নাকো প্রভু,

কে তোমারে করিল পাষাণ! কে তোমারে

আমার সৌভাগ্য হতে লইল কাড়িয়া!

করিল আমারে রাজাহীন রানী!

গোবিন্দমাণিক্য।                               প্রিয়ে,

আমারে বিশ্বাস করো একবার শুধু,

না বুঝিয়া বোঝো মোর পানে চেয়ে। অশ্রু

দেখে বোঝো, আমারে যে ভালোবাস সেই

ভালোবাসা দিয়ে বোঝো — আর রক্তপাত

নহে। মুখ ফিরায়ো না দেবী, আর মোরে

ছাড়িয়ো না, নিরাশ কোরো না আশা দিয়ে।

যাবে যদি মার্জনা করিয়া যাও তবে।

[ গুণবতীর প্রস্থান

গেলে চলি! কী কঠিন নিষ্ঠুর সংসার।–

ওরে কে আছিস?— কেহ নাই? চলিলাম।

বিদায় হে সিংহাসন! হে পুণ্য প্রাসাদ,

আমার পৈতৃক ক্রোড়, নির্বাসিত পুত্র

তোমারে প্রণাম ক'রে লইল বিদায়।