রাজা ও রানী

বলি তাহাদের, কত কাব্যকথা, শুনে

মূর্খ দুটো হাসে। একদিন বর্ষা দেখে

বিরহব্যথায় মেঘদূত কাব্যখানা

শুনালেম দোঁহে ডেকে ; গ্রাম্য মূর্খ দুটো

পড়িল কাতর হয়ে নিদ্রার আবেশে।

তখনি ধিক্কারভরে কারাগার ছাড়ি

আসিনু চলিয়া। বেছে বেছে ভালো লোক

দিয়েছিলে বিরহী এ ব্রাহ্মণের 'পরে!

এত লোক আছে সখা অধীনে তোমার

শাস্ত্র বোঝে এমন কি ছিল না দুজন?

বিক্রমদেব।  বন্ধুবর, বড়ো কষ্ট দিয়েছে তোমারে।

সমুচিত শাস্তি দিব তারে, যে পাষণ্ড

রেখেছিল রুধিয়া তোমায়। নিশ্চয় সে

ক্রুরমতি জয়সেন।

  দেবদত্ত।                   শাস্তি পরে হবে।

আপাতত যুদ্ধ রেখে অবিলম্বে দেশে

ফিরে চলো। সত্য কথা বলি মহারাজ,

বিরহ সামান্য ব্যথা নয় এবার তা

পেরেছি বুঝিতে। আগে আমি ভাবিতাম

শুধু বড়ো বড়ো লোক বিরহেতে মরে।

এবার দেখেছি, সামান্য এ ব্রাহ্মণের

ছেলে, এরেও ছাড়ে না পঞ্চবাণ ; ছোটো

বড়ো করে না বিচার।

বিক্রমদেব।                       যম আর প্রেম

উভয়েরি সমদৃষ্টি সর্বভূতে। বন্ধু,

ফিরে চলো দেশে। কেবল যাবার আগে

এক কাজ বাকি আছে। তুমি লহো ভার।

অরণ্যে কুমারসেন আছে লুকাইয়া,

ত্রিচূড়রাজের কাছে সন্ধান পাইবে

সখে, তার কাছে যেতে হবে। বলো তারে,

আর আমি শত্রু নহি। অস্ত্র ফেলে দিয়ে

বসে আছি প্রেমে বন্দী করিবারে তারে।