ফাল্গুনী
গান

পথিক ভুবন ভালোবাসে

পথিকজনে রে।

এমন সুরে তাই সে ডাকে

ক্ষণে ক্ষণে রে।

চলার পথের আগে আগে

ঋতুর ঋতুর সোহাগ জাগে,

চরণঘায়ে মরণ মরে

পলে পলে॥

কোটাল। কোনো সহজ মানুষকে তো কথা বলতে বলতে গান গাইতে শুনি নি।

আবার ধরা পড়ে গেছি রে, আমরা সহজ মানুষ না।

কোটাল। তোমাদের কোনো কাজকর্ম নেই বুঝি?

না। আমাদের ছুটি।

কোটাল। কেন বলো তো।

চন্দ্রহাস। পাছে সময় নষ্ট হয়।

কোটাল। এটা তো বোঝা গেল না।

ঐ দেখো — তা হলে আবার গান ধরতে হল।

কোটাল। না, তার দরকার নেই। আর বেশি বোঝবার আশা রাখি নে।

সবাই আমাদের বোঝবার আশা ছেড়ে দিয়েছে।

কোটাল। এমন হলে তোমাদের চলবে কী করে।

চন্দ্রহাস। আর তো কিছুই চলবার দরকার নেই — শুধু আমরাই চলি।

কোটাল। ( মাঝির প্রতি) পাগল রে! উন্মাদ পাগল!

চন্দ্রহাস। এই যে এতক্ষণ পরে দাদা আসছে।

কী দাদা, পিছিয়ে পড়েছিলে কেন।

চন্দ্রহাস। ওরে আমরা চলি উনপঞ্চাশ বায়ুর মতো, আমাদের ভিতরে পদার্থ কিছুই নেই ; আর দাদা চলে শ্রাবণের মেঘ — মাঝে মাঝে থমকে দাঁড়িয়ে ভারমোচন করতে হয়। পথের মধ্যে ওকে শ্লোকরচনায় পেয়েছিল।

দাদা। চন্দ্রহাস, দৈবাৎ তোমার মুখে এই উপমাটি উপাদেয় হয়েছে। ওর মধ্যে একটু সার কথা আছে। আমি ওটি চৌপদীতে গেঁথে নিচ্ছি।

চন্দ্রহাস। না, না, এখন থাক্‌ দাদা। আমরা কাজে বেরিয়েছি। তোমার চৌপদীর চার পা, কিন্তু চলবার বেলা এতবড়ো খোঁড়া জন্তু জগতে দেখতে পাওয়া যায় না।

দাদা। আপনি কে।