কাহিনী

পাণ্ডুর বালুকাতটে।

কর্ণ।                     হোথা মাতৃহারা

মা পাইবে চিরদিন! হোথা ধ্রুবতারা

চিররাত্রি রবে জাগি সুন্দর উদার

তোমার নয়নে! দেবী, কহো আরবার

আমি পুত্র তব।

কুন্তী।                     পুত্র মোর!

কর্ণ।                             কেন তবে

আমারে ফেলিয়া দিলে দূরে অগৌরবে

কুলশীলমানহীন মাতৃনেত্রহীন

অন্ধ এ অজ্ঞাত বিশ্বে। কেন চিরদিন

ভাসাইয়া দিলে মোরে অবজ্ঞার স্রোতে —

কেন দিলে নির্বাসন ভ্রাতৃকুল হতে।

রাখিলে বিচ্ছিন্ন করি অর্জুনে আমারে —

তাই শিশুকাল হতে টানিছে দোঁহারে

নিগূঢ় অদৃশ্য পাশ হিংসার আকারে

দুর্নিবার আকর্ষণে। মাতঃ, নিরুত্তর?

লজ্জা তব ভেদ করি অন্ধকার স্তর

পরশ করিছে মোরে সর্বাঙ্গে নীরবে —

মুদিয়া দিতেছে চক্ষু। থাক্‌, থাক্‌ তবে —

কহিয়ো না কেন তুমি ত্যজিলে আমারে।

বিধির প্রথম দান এ বিশ্বসংসারে

মাতৃস্নেহ, কেন সেই দেবতার ধন

আপন সন্তান হতে করিলে হরণ

সে কথার দিয়ো না উত্তর। কহো মোরে

আজি কেন ফিরাইতে আসিয়াছ ক্রোড়ে।

কুন্তী।      হে বৎস, ভর্ৎসনা তোর শতবজ্রসম

বিদীর্ণ করিয়া দিক এ হৃদয় মম

শত খণ্ড করি। ত্যাগ করেছিনু তোরে

সেই অভিশাপে পঞ্চপুত্র বক্ষে ক'রে

তবু মোর চিত্ত পুত্রহীন — তবু হায়,

তোরি লাগি বিশ্বমাঝে বাহু মোর ধায়,