প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
হুতাশনে দান। অপমানিতের করে
ক্ষমতার অস্ত্র দেওয়া মরিবার তরে।
সক্ষমে দিয়ো না ছাড়ি দিয়ে স্বল্প পীড়া —
করহ দলন। কোরো না বিফল ক্রীড়া
পাপের সহিত ; যদি ডেকে আন তারে,
বরণ করিয়া তবে লহো একেবারে। ”
এইমত পাপবুদ্ধি পিতৃস্নেহরূপে
বিঁধিতে লাগিল মোর কর্ণে চুপে চুপে
কত কথা তীক্ষ্ম সূচিসম। পুনরায়
ফিরানু পাণ্ডবগণে ; দ্যূতছলনায়
বিসর্জিনু দীর্ঘ বনবাসে। হায় ধর্ম,
হায় রে প্রবৃত্তিবেগ! কে বুঝিবে মর্ম
সংসারের!
গান্ধারী। ধর্ম নহে সম্পদের হেতু,
মহারাজ, নহে সে সুখের ক্ষুদ্র সেতু —
ধর্মেই ধর্মের শেষ। মূঢ়-নারী আমি,
ধর্মকথা তোমারে কী বুঝাইব স্বামী,
জান তো সকলই। পাণ্ডবেরা যাবে বনে,
ফিরাইলে ফিরিবে না, বদ্ধ তারা পণে।
এখন এ মহারাজ্য একাকী তোমার
মহীপতি — পুত্রে তব ত্যজ এইবার ;
নিষ্পাপেরে দুঃখ দিয়ে নিজে পুর্ণ সুখ
লইয়ো না, ন্যায়ধর্মে কোরো না বিমুখ
পৌরবপ্রাসাদ হতে — দুঃখ সুদুঃসহ
আজ হতে, ধর্মরাজ, লহো তুলি লহো,
দেহো তুলি মোর শিরে।
ধৃতরাষ্ট্র। হায় মহারানী,
সত্য তব উপদেশ, তীব্র তব বাণী।
গান্ধারী। অধর্মের মধুমাখা বিষফল তুলি
আনন্দে নাচিছে পুত্র ; স্নেহমোহে ভুলি
সে ফল দিয়ো না তারে ভোগ করিবারে ;
কেড়ে লও, ফেলে দাও, কাঁদাও তাহারে।