শোধবোধ
নিজের নাম লিখে পাঠাতে সংকোচ করে না। মনে বুঝলুম, আমি দিয়েছি শূন্য পাতা, আর তারাই দিলে পূর্ণ করবার জিনিস।

নলিনী। তোমাকে এখনই বুঝিয়ে দিচ্ছি ভুল করেছে সে। ছবি দিতে সবাই পারে, ছবি রাখবার জায়গা দিতে কজন পারে। ভীরু, তোমার অদৃশ্য ছবিরই জিত থাক। (নন্দীর ছবি ছিঁড়িয়া ফেলিল) ও কী, অমন করে লাফিয়ে উঠলে কেন। মৃগীরোগে ধরল নাকি।

সতীশ। কোন্‌ রোগে ধরেছে তা অন্তর্যামী জানেন। নেলি, একবার তুমি আমাকে স্পষ্ট করে —

নলিনী। এই বুঝি নাটক শুরু হল? চোখের সামনে দেখলে তো যে-ছবি চেঁচিয়ে কথা কয়, তার কী দশা। যে মানুষ চুপ করে থাকতে জানে না, তারও —

সতীশ। আর কাজ নেই, নেলি, থাক্‌। তোমাকে কত ভয় করি, তুমি জানো না।

নলিনী। ভয় যদি কর তা হলে অ্যাল্‌বম চুরি কোরো না। আমি কাপড় ছেড়ে আসিগে।

সতীশ। একটি অনুরোধ। আন্‌হার্ড মেলডি আমার মুখে খুবই মিষ্টি, কিন্তু তোমার মুখে নয়। তোমার জন্মদিনে তোমার মুখে একটি গান শুনে যাব।

নলিনী। আচ্ছা।

গান

বেদনায় ভরে গিয়েছে পেয়ালা,

নিয়ো হে নিয়ো।

হৃদয় বিদারি হয়ে গেল ঢালা,

পিয়ো হে পিয়ো।

ভরা সে পাত্র, তারে বুকে করে

বেড়ানু বহিয়া সারা রাতি ধরে —

লও তুলে লও আজি নিশিভোরে,

প্রিয় হে প্রিয়।

বাসনার রঙে লহরে লহরে

রঙিন হল।

করুণ তোমার অরুণ অধরে

তোলো হে তোলো।

এ রসে মিশাক তব নিশ্বাস,

নবীন উষার পুষ্পসুবাস —

এরই 'পরে তব আঁখির আভাস

দিয়ো হে দিয়ো।

চারুর প্রবেশ

চারু। এ কী করেছিস, নেলি। মিস্টার নন্দীর ফোটো —