শোধবোধ

লাহিড়ি। এই বুঝি ওর সব জন্মদিনের প্রেজেন্ট্‌? বরুণের ব্রেস্‌‍লেটটা কি এমনি টেবিলের উপরেই থাকবে?

চারু। থাক্‌-না, আমি ওর উপর চোখ রাখব।

লাহিড়ি। এটা কার? একটা মক্‌মলের মলাটের অ্যাল্‌বম। এ দেখছি সতীশের! দাম লেখা আছে, মুছে ফেলতেও হুঁশ ছিল না। এক টাকা বারো আনা। ইন্‌‍সল্‌‌‌‌‌‍ভেন্সির মামলা আনতে হবে না। সেকেণ্ড্‌হ্যাণ্ড সেলে কেনা। এটাও কি এখানে থাকবে নাকি।

চারু। সরাতে গেলে নেলি রক্ষা রাখবে না।

লাহিড়ি। থাক্‌ তবে, তুমি এখানে একটু বোসো, আমি ড্রেস করে আসি।

[ প্রস্থান
সতীশের প্রবেশ

চারু। এত সকাল-সকাল যে?

সতীশ।(লজ্জিত হইয়া) দেখছি আমার ঘড়িটা ঠিক চলছিল না। যাই, বরঞ্চ আমি একটু ঘুরে আসিগে।

চারু। না, আপনি বসুন, সময় হয়ে এসেছে। নেলির প্রেজেন্ট্‌গুলো দেখুন-না। এই দেখেছেন?

সতীশ। এ যে হীরের ব্রেস্‌‌‌‌‌‍লেট! এ কে দিয়েছে।

চারু। মিস্টার নন্দী। চমৎকার না?

সতীশ। তাই তো। বেশ।

চারু। এই মুক্তো-দেওয়া হেয়ার‌্‌‍পিনটা আমার ভাই অমূল্যর দেওয়া। আর এই রুপোর দোয়াতদান — ও কী সতীশবাবু, যাচ্ছেন নাকি?

সতীশ। ভাবছি এইবেলা আমার কাজ সেরে আসি।

চারু। আপনার অ্যাল্‌বমটি নেলির কাজে লাগবে। এই দেখুন-না মিস্টার নন্দী ওকে তাঁর সই-করা ফোটো পাঠিয়ে দিয়েছেন।

সতীশ। হাঁ, তাই তো দেখছি। আমার কিন্তু বিশেষ কাজ আছে, আমি যাই। আর দেখুন, এখনকার মতো এই অ্যাল্‌বমটা আমি নিয়ে যাচ্ছি — তার পরে —

চারু। কী করবেন।

সতীশ। না, ওটা — একবার — একটুখানি ঐ — আপনি দয়া করে নেলিকে বলবেন যে, বিশেষ একটু কারণে এখনকার মতো — তার পরে আবার — এখন যাই — কাজ আছে।

[ প্রস্থান

চারু। যাক, বিদায় করে দেওয়া গেল। মা গো, কী টাই পরেই এসেছে। অ্যাল্‌বমটাও গেল। এই-যে মিস্টার লাহিড়ি, শুনে যান, সুখবর আছে, বকশিশ চাই।

নেপথ্যে। একটু পরেই যাচ্ছি, আমার বাট্‌ন্‌হুক্‌টা খুঁজে পাচ্ছি নে।

সতীশকে লইয়া নলিনীর প্রবেশ

চারু। ও কী, নেলি, তোর ভালো করে তো সাজা হল না।

নলিনী। হঠাৎ কোতোয়ালি করতে হল। ড্রেসিংরুমের জানলা দিয়ে দেখি, চোর পালাচ্ছে একটা মাল বগলে নিয়ে, তখনই