প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
অক্ষয়। তা যেন বুঝলুম, মিষ্টান্ন সকলেরই পাতে পড়ল, কিন্তু তোমারই জলযোগটি কিছু কটু রকম হবে। এইবেলা ভ্রম সংশোধন করে নাও। শ্রীশবাবু, বিপিনবাবু, কিছু মনে কোরো না — এর মধ্যে একটু পারিবারিক রহস্য আছে।
শ্রীশ। সরলপ্রকৃতি রসিকবাবু সে রহস্য আমাদের নিকট ভেদ করেই দিয়েছেন। আমাদের ফাঁকি দিয়ে আনেন নি।
বিপিন। মিষ্টান্নের থালায় আমরা অনধিকার আক্রমণ করি নি, শেষ পর্যন্ত তার প্রমাণ দিতে প্রস্তুত আছি।
অক্ষয়। বল কী বিপিনবাবু। তা হলে চিরকুমার - সভাকে চিরজন্মের মতো কাঁদিয়ে এসেছ? জেনেশুনে, ইচ্ছাপূর্বক?
রসিক। না না, তুমি ভুল করছ অক্ষয়।
অক্ষয়। আবার ভুল? আজ কি সকলেরই ভুল করবার দিন হল নাকি। —
গান
ভুলে ভুলে আজ ভুলময়।
ভুলের লতায় বাতাসের ভুলে
ফুলে ফুলে হোক ফুলময়।
আনন্দ - ঢেউ ভুলের সাগরে উছলিয়া হোক কূলময়।
রসিক। এ কী, বড়োমা আসছেন যে!
অক্ষয়। আসবারই তো কথা। উনি তো কুমারটুলির ঠিকানায় যাবেন না।
জগত্তারিণীর প্রবেশ
শ্রীশ ও বিপিনের ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম
দুইজনকে দুই মোহর দিয়া জগত্তারিণীর আশীর্বাদ। জনান্তিকে অক্ষয়ের সহিত জগত্তারিণীর আলাপ
অক্ষয়। মা বলছেন, তোমাদের আজ ভালো করে খাওয়া হল না, সমস্তই পাতে পড়ে রইল।
শ্রীশ। আমরা দুবার চেয়ে নিয়ে খেয়েছি।
বিপিন। যেটা পাতে পড়ে আছে ওটা তৃতীয় কিস্তি।
শ্রীশ। ওটা না পড়ে থাকলে আমাদেরই পড়ে থাকতে হত।
জগত্তারিণী। ( জনান্তিকে ) তা হলে তোমরা ওঁদের বসিয়ে কথাবার্তা কও বাছা, আমি আসি।
[ প্রস্থান
রসিক। না, এ ভারি অন্যায় হল।
অক্ষয়। অন্যায়টা কী হল।
রসিক। আমি ওঁদের বার বার করে বলে এসেছি যে, ওঁরা কেবল আজ আহারটি করেই ছুটি পাবেন, কোনোরকম বধবন্ধনের আশঙ্কা নেই। কিন্তু —
শ্রীশ। ওর মধ্যে কিন্তুটা কোথায় রসিকবাবু। আপনি অত চিন্তিত হচ্ছেন কেন।
রসিক। বলেন কী শ্রীশবাবু, আপনাদের আমি কথা দিয়েছি যখন —
বিপিন। তা বেশ তো, এমনিই কী মহাবিপদে ফেলেছেন।
শ্রীশ। মা আমাদের যে আশীর্বাদ করে গেলেন আমারা যেন তার যোগ্য হই।