প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
অক্ষয়। কোনোমতেই না।
পুরবালার প্রবেশ
পুরবালা। আয়, তোদের সাজিয়ে দিই গে।
নীরবালা। আমরা সাজব না।
পুরবালা। ভদ্রলোকদের সামনে এইরকম বেশেই বেরোবি! লজ্জা করবে না!
নীরবালা। লজ্জা করবে বৈকি দিদি, কিন্তু সেজে বেরোতে আরো বেশি লজ্জা করবে।
অক্ষয়। উমা তপস্বিনীবেশে মহাদেবের মনোহরণ করেছিলেন, শকুন্তলা যখন দুষমন্তের হৃদয় জয় করেছিল তখন তার গায়ে একখানি বাকল ছিল — কালিদাস বলেন, সেও কিছু আঁট হয়ে পড়েছিল — তোমার বোনেরা সেই - সব পড়ে সেয়ানা হয়ে উঠেছে, সাজতে চায় না।
পুরবালা। সে - সব হল সত্যযুগের কথা। কলিকালের দুষমন্ত মহারাজারা সাজ - সজ্জাতেই ভোলেন।
অক্ষয়। যথা —
পুরবালা। যথা তুমি। যেদিন তুমি দেখতে এলে, মা বুঝি আমাকে সাজিয়ে দেন নি?
অক্ষয়। আমি মনে মনে ভাবলেম, সাজেও যখন একে সেজেছে তখন সৌন্দর্যে না জানি কত শোভা হবে।
পুরবালা। আচ্ছা, তুমি থামো। নীরু, আয়।
নীরবালা। না ভাই দিদি —
পুরবালা। আচ্ছা, সাজ নাই করলি, চুল তো বাঁধতে হবে?
অক্ষয়। —
গান
অলকে কুসুম না দিয়ো,
শুধু শিথিল কবরী বাঁধিয়ো।
কাজলবিহীন সজল নয়নে
হৃদয়দুয়ারে ঘা দিয়ো।
আকুল আঁচলে পথিকচরণে
মরণের ফাঁদ ফাঁদিয়ো।
না করিয়া বাদ মনে যাহা সাধ
নিদয়া নীরবে সাধিয়ো।
পুরবালা। তুমি আবার গান ধরলে! আমি কখন কী করি বলো দেখি। তাদের আসবার সময় হল — এখনো আমার খাবার তৈরি করা বাকি আছে।
[ নৃপবালা ও নীরবালাকে লইয়া প্রস্থান