স্বর্গীয় প্রহসন
ওলাবিবি, তা হলে আরো জমত। তার কি খাবার গোল হয়েছে তাই সে শচীর সঙ্গে ঝগড়া করতে গেছে।

ইন্দ্র। ( ব্যাকুলভাবে) হা সুরেন্দ্রবক্ষোবিহারিণী দেবী পৌলমী!

মনসার দ্রুতবেগে সভাত্যাগ এবং শীতলার পুনশ্চ চন্দ্রের পার্শ্বে উপবেশন

বীণাপাণির প্রবেশ

বীণাপাণি। দেবরাজ, কর্কশ কোলাহলে আমার দেববীণার স্বরস্খলন হইতেছে, আমার কমলবন শূন্যপ্রায়, আমি দেবলোক হইতে বিদায় গ্রহণ করিলাম।

[ প্রস্থান

বৃহস্পতি। আমিও জননী বাণীর অনুগমন করি।

[ প্রস্থান

অশ্লেষা ও মঘার সভাপ্রবেশ

অশ্লেষা ও মঘা। ( চন্দ্রের একাসনে শীতলাকে দেখিয়া) আজ অপরূপ অভিনব সপ্তদশ কলায় দেব শশধরকে সমধিকতর শোভমান দেখিতেছি!

চন্দ্র। দেবীগণ, এই হতভাগ্যকে অকরুণ পরিহাসে বিড়ম্বিত করিবেন না। পুরুষ রাহু আমাকে কেবল ক্ষণমাত্রকাল পরাভব করিতে পারে সেই আক্রোশে ঈর্ষান্বিত ভগবান একটি স্ত্রী রাহু সৃজন করিয়াছেন, ইহার পূর্ণগ্রাস হইতে আমি বহু চেষ্টায় আপনাকে মুক্ত করিতে পারিতেছি না।

অশ্লেষা। আর্যপুত্র, এই ভদ্রললনা অনতিপূর্বে তোমার অন্তঃপুরে প্রবেশপূর্বক তোমার শ্বশুরকুলকে ঊর্ধ্বতন চতুর্দশ পুরুষ পর্যন্ত অশ্রুতপূর্ব কুৎসা-দ্বারা লাঞ্ছিত করিয়া আসিয়াছেন। দেবীর সেই আশ্চর্য ব্যবহারকে আমরা অধিকারবহির্ভূত উপদ্রব জ্ঞান করিয়া বিস্ময়ান্বিত হইয়াছিলাম। এক্ষণে স্পষ্ট বুঝিতে পারিতেছি সৌভাগ্যবতী তোমারই হস্তে সেই অবমাননার অধিকার প্রাপ্ত হইয়াছেন। এখন, আর্যপুত্রকে তাঁহার নবতর শ্বশুরকুলে বরণ করিয়া আমরা নক্ষত্রলোক হইতে বিচ্যুতিলাভের জন্য চলিলাম। ( শীতলার প্রতি) ভদ্রে, কল্যাণী, তোমার সৌভাগ্য অক্ষয় হউক।

[ প্রস্থান


শচীর প্রবেশ

ইন্দ্র (সসম্ভ্রমে আসন ত্যাগ করিয়া) আর্যে, শুভ আগমন হউক।

ঘেঁটু। ( উত্তরীয় ধরিয়া ইন্দ্রকে সবলে আসনে উপবেশন করাইয়া) ইস্‌! ভারি খাতির যে! মাইরি দাদা, ঢের ঢের পুরুষ-মানুষ দেখেছি, কিন্তু তোর মতো এমন স্ত্রৈণ আমি দেখি নি।

ঘেঁটুকে ইন্দ্রের বামপার্শ্বে শচীর নির্দিষ্ট স্থানে বসিতে দেখিয়া দূরে এক

কোণে শচীদেবী-কর্তৃক সামান্য এক আসন গ্রহণ

ঘেঁটু। ( শচীর অনতিদূরে গমন করিয়া সহাস্যে) বউঠাকরুন, আমার দাদাকে কী মন্তর পড়ে দিয়েছ বলো দেখি! একেবারে শ্রীচরণের গোলাম করে রেখেছ! তুমি উঠলে ওঠে, তুমি বসলে বসে। বলি, একটা কথাই কও। ( গান) ‘ কথা কইতে দোষ কি আছে বিধুমুখী!'