পরিত্রাণ

বসন্তরায় ও একজন পাঠানের প্রবেশ

পাঠান। কোন্‌ হ্যায় রে!

প্রজা। দোহাই বাবা, আমরা চাষি লোক-

পাঠান। রাত্তিরে কী করতে বেরিয়েছিস?

ধনঞ্জয়। রাত্তিরে যারা বেরোয় তাদের সঙ্গে মিলন হবে বলেই বেরিয়েছি। দিনে মিলি কাজের লোকের সঙ্গে, রাত্তিরে মিলি অকাজের লোকের সঙ্গে।

পাঠান। ভয় ডর নেই?

ধনঞ্জয়। দাদা, তোমারও তো ভয় ডর নেই দেখছি। দুই নির্ভয়ে সামনাসামনি দেখাসাক্ষাৎ হল-এ তো পরম

আনন্দ। ( প্রজাদের প্রতি) যাস কোথায় তোরা!চেনাশোনা করে নে-না।

বসন্ত। ভাবে বোধ হচ্ছে, তুমিই ধনঞ্জয় ঠাকুর, কেমন ঠিক ঠাউরেছি কি না?

ধনঞ্জয়। ধরা পড়েছি। রাত-কানা নও তুমি।

বসন্ত। তেমন মানুষ অন্ধকারেও চোখে পড়ে।

ধনঞ্জয়। তুমিও তো অন্ধকারে ঢাকা পড়বার লোক নও, খুড়ো মহারাজ!

পাঠান। যাঃ চলে! সব ফেঁসে গেল!

ধনঞ্জয়। কী ফাঁসল দাদা!

পাঠান। মহারাজের সঙ্গে ঠিক যে সময়টিতে একলা আলাপ জমিয়েছিলুম, তুমি এসে বাগড়া দিলে।

ধনঞ্জয়। খাঁ-সাহেব, তুমি জান না, বাগড়া দিয়েই আলাপ জমান যিনি বড়ো আলাপী।

গান

আমার   পথে পথেই পাথর ছড়ানো।

তাই তো তোমার বাণী বাজে

ঝর‌্না-ঝরানো।

আমার বাঁশি তোমার হাতে

ফুটোর পরে ফুটো তাতে,

তাই শুনি সুর অমন মধুর

পরান-ভরানো।

তোমার হাওয়া যখন জাগে

আমার পালে বাধা লাগে,

এমন করে গায়ে প'ড়ে

সাগর-তরানো।

ছাড়া পেলে একেবারে

রথ কি তোমার চলতে পারে?