মুক্তধারা

অভিজিৎ। সময় এখনই এসেছে এই কথাই জানি, কিন্তু সময় আবার আসবে কি না সে কথা কেউ জানি নে।

বিশ্বজিৎ। আমরাও তোমার সঙ্গে যোগ দেব।

অভিজিৎ। না, সকলের এক কাজ নয়, আমার উপর যে কাজ পড়েছে সে একলা আমারই।

বিশ্বজিৎ। তোমার শিবতরাইয়ের ভক্তদল যে তোমার কাজে হাত দেবার জন্যে অপেক্ষা করে আছে, তাদের ডাকবে না?

অভিজিৎ। যে ডাক আমি শুনেছি সেই ডাক যদি তারাও শুনত তবে আমার জন্যে অপেক্ষা করত না। আমার ডাকে তারা পথ ভুলবে।

বিশ্বজিৎ। ভাই, অন্ধকার হয়ে এসেছে যে।

অভিজিৎ। যেখান থেকে ডাক এসেছে সেইখান থেকে আলোও আসবে।

বিশ্বজিৎ। তোমাকে বাধা দিতে পারি এমন শক্তি আমার নেই। অন্ধকারের মধ্যে একলা চলেছ তুবও তোমাকে বিদায় দিয়ে ফিরতে হবে। কেবল একটি আশ্বাসের কথা বলে যাও যে, আবার মিলন ঘটবে।

অভিজিৎ। তোমার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হবার নয় এই কথাটি মনে রেখো।

[ দুই জনের দুই পথে প্রস্থান


ধনঞ্জয়ের প্রবেশ
গান
          আগুন, আমার ভাই,
              আমি তোমারি জয় গাই।
তোমার       শিকল-ভাঙা এমন রাঙা
                    মূর্তি দেখি নাই।
                    দু-হাত তুলে আকাশ পানে
                    মেতেছ আজ কিসের গানে?
এ কী      আনন্দময় নৃত্য অভয়;      
                    বলিহারি যাই।
যেদিন      ভবের মেয়াদ ফুরোবে,ভাই   
                    আগল যাবে সবে
সেদিন      হাতের দড়ি পায়ের দড়ি,     
                    দিবি রে ছাই করে।
সেদিন        আমার অঙ্গ তোমার অঙ্গে
            ঐ নাচনে নাচবে রঙ্গে,
            সকল দাহ মিটবে দাহে,
                    ঘুচবে সব বালাই।