প্রজাপতির নির্বন্ধ

শ্রীশ। আপনাদের পরীক্ষার আর তো দেরি নেই।

পূর্ণ। না।

নৃপবালা ও নীরবালাকে লইয়া অক্ষয়ের প্রবেশ

অক্ষয়। (নৃপ ও নীরর প্রতি) ইনি চন্দ্রবাবু, ইনি তোমাদের গুরুজন, এ কে প্রণাম করো। (নৃপ ও নীরর প্রণাম) চন্দ্রবাবু, নূতন নিয়মে আপনাদের সভায় এই দুটি সভ্য বাড়ল।

চন্দ্র। বড়ো খুশি হলেম। এঁরা কে?

অক্ষয়। আমার সঙ্গে এঁদের সম্বন্ধ খুব ঘনিষ্ঠ। এঁরা আমার দুটি শ্যালী। শ্রীশবাবু এবং বিপিনবাবুর সঙ্গে এঁদের সম্বন্ধ শুভলগ্নে আরো ঘনিষ্ঠতর হবে। এঁদের প্রতি দৃষ্টি করলেই বুঝবেন, রসিকবাবু এই যুবক দুটির যে মতের পরিবর্তন করিয়েছেন সে কেবলমাত্র বাগ্মীতার দ্বারা নয়।

চন্দ্র। বড়ো আনন্দের কথা।

পূর্ণ। শ্রীশবাবু, বড়ো খুশি হলুম! বিপিনবাবু, আপনাদের বড়ো সৌভাগ্য! আশা করি অবলাকান্তবাবুও বঞ্চিত হন নি, তাঁরও একটি–

নির্মলার প্রবেশ

চন্দ্র। নির্মলা, শুনে খুশি হবে, শ্রীশবাবু এবং বিপিনবাবুর সঙ্গে এঁদের বিবাহের সম্বন্ধ স্থির হয়ে গেছে। তা হলে কুমারব্রত উঠিয়ে দেওয়া সম্বন্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করাই বাহুল্য।

নির্মলা। কিন্তু অবলাকান্তবাবুর মত তো নেওয়া হয় নি– তাঁকে এখানে দেখছি নে–

চন্দ্র। ঠিক কথা, আমি সেটা ভুলেই গিয়েছিলুম, তিনি আজ এখনো এলেন না কেন?

রসিক। কিছু চিন্তা করবেন না, তাঁর পরিবর্তন দেখলে আপনারা আরো আশ্চর্য হবেন।

অক্ষয়। চন্দ্রবাবু, এবারে আমাকেও দলে নেবেন। সভাটি যেরকম লোভনীয় হয়ে উঠল, এখন আমাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন না।

চন্দ্র। আপনাকে পাওয়া আমাদের সৌভাগ্য।

অক্ষয়। আমার সঙ্গে সঙ্গে আর-একটি সভ্যও পাবেন। আজকের সভায় তাঁকে কিছুতেই উপস্থিত করতে পারলেম না। এখন তিনি নিজেকে সুলভ করবেন না– বাসরঘরে ভূতপূর্ব কুমারসভাটিকে সাধ্যমত পিণ্ডদান করে তার পরে যদি দেখা দেন। এইবার অবশিষ্ট সভ্যটি এলেই আমাদের চিরকুমার-সভা সম্পূর্ণ সমাপ্ত হয়!

শৈলের প্রবেশ

শৈল। (চন্দ্রকে প্রণাম করিয়া) আমাকে ক্ষমা করবেন।

শ্রীশ। এ কী, অবলাকান্তবাবু–

অক্ষয়। আপনারা মত পরিবর্তন করেছেন, ইনি বেশ পরিবর্তন করেছেন মাত্র।

রসিক। শৈলজা ভবানী এতদিন কিরাতবেশ ধারণ করেছিলেন, আজ ইনি আবার তপস্বিনীবেশ গ্রহণ করলেন।