যোগাযোগ

ব্যাকুল হয়ে

 

কুমুদিনী। আমি হতভাগিনী এসে তোমাদের বিপদ ঘটালুম।

নবীন। ঠিক তার উল্‌টো। অনেক দিন থেকেই মনটা যাই-যাই করছিল, বেঁধে-সেধে তৈরি হয়ে ছিলুম, এমন সময় তুমি এলে আমাদের ঘরে। ঘরের আশ খুব করেই মিটেছিল, কিন্তু বিধাতার সইল না।

তুমি কি শ্বশুরবাড়ি একেবারেই যাবে না ঠিক করেছ?

কুমুদিনী। না, যাব না।

মোতির মা। তা হলে তোমার গতি কোথায়?

কুমুদিনী। মস্ত এই পৃথিবী, এর মধ্যে কোনো এক জায়গায় আমারও একটুখানি ঠাঁই হতে পারবে। জীবনে অনেক যায় খসে, তবুও কিছু বাকি থাকে।

ঠাকুরপো, তা হলে কী করবে এখন?

নবীন। নদীর ধারে কিছু জমি আছে, তার থেকে মোটা ভাত জুটবে, হাওয়া খাওয়াও চলবে।

উষ্মার সঙ্গে

মোতির মা। ওগো মশায়, না, সেজন্যে তোমাকে ভাবতে হবে না। ওই মির্জাপুরের অন্নজলে দাবি রাখি, সে কেউ কাড়তে পারবে না। আমরা তো এত বেশি সম্মানী লোক নই, বড়োঠাকুর তাড়া দিলেই অমনি বিবাগী হয়ে চলে যাব! তিনিই আবার আজ বাদে কাল ফিরিয়ে ডাকবেন, তখন ফিরেও আসব, ইতিমধ্যে সবুর সইবে, এই বলে রাখলুম।

নবীন। সে কথা জানি মেজোবউ, কিন্তু তা নিয়ে বড়াই করি নে। পুনর্জন্ম যদি থাকে তবে সম্মানী হয়েই যেন জন্মাই, তাতে অন্নজলের যদি টানাটানি ঘটে সেও স্বীকার।

[ মোতির মা ও নবীনের প্রস্থান

 

ভৃত্যের প্রবেশ

 

ভৃত্য। ডাক্তারবাবু এসেছেন।

কুমুদিনী। ডেকে দাও।

 

[ ভৃত্যের প্রস্থান

ডাক্তারের প্রবেশ

 

ডাক্তার। নাড়ি আরো খারাপ, রাত্তিরে ঘুম কমেছে। বোধ হয় রোগী ঠিক বিশ্রাম পাচ্ছে না। সাবধানে রেখো। আমি চললুম।

[ প্রস্থান

 

কালুর প্রবেশ