শেষ বর্ষণ

ওই         বসেছ শুভ্র আসনে

আজি         নিখিলের সম্ভাষণে।

আহা         শ্বেতচন্দনতিলকে

আজি         তোমারে সাজায়ে দিল কে?

আহা         বরিল তোমারে কে আজি

তার         দুঃখ-শয়ন তেয়াজি,

তুমি         ঘুচালে কাহার বিরহ-কাঁদনা।

নটরাজ। প্রিয়দর্শিকা, সময় হয়েছে, এইবার বাদললক্ষ্মীর অবগুণ্ঠন খুলে দেখো। চিনতে পারবে সেই ছদ্মবেশিনীই শরৎপ্রতিমা। বর্ষার ধারায় যাঁর কণ্ঠ গদগদ, শিউলিবনে তাঁরই গান, মালতীবিতানে তাঁরই বাঁশির ধ্বনি।

    এবার অবগুণ্ঠন খোলো।

    গহন মেঘমায়ায় বিজন বনছায়ায়

তোমার   আলসে অবলুণ্ঠন সারা হল।

      শিউলি-সুরভি রাতে

      বিকশিত জ্যোৎস্নাতে

মৃদু মর্মর গানে তব মর্মের বাণী বলো

গোপন অশ্রুজলে বিলুক শরম-হাসি—

মালতীবিতানতলে বাজুক বঁধুর বাঁশি।

       শিশিরসিক্ত বায়ে

      বিজড়িত আলোছায়ে

বিরহমিলনে গাঁথা নব প্রণয়দোলায় দোলো।

[ অবগুণ্ঠন মোচন

নটরাজ। অবগুণ্ঠন তো খুলল। কিন্তু এ কী দেখলুম। এ কি রূপ, না বাণী? এ কি আমার মনেরই মধ্যে, না আমার চোখেরই সামনে?

তোমার নাম জানি নে সুর জানি।

তুমি শরৎপ্রাতের আলোর বাণী।

       সারাবেলা শিউলিবনে

      আছি মগন আপন মনে,

কিসের ভুলে রেখে গেলে

       আমার বুকে ব্যথার বাঁশিখানি।

আমি যা বলিতে চাই হল বলা,

ওই শিশিরে শিশিরে অশ্রুগলা।

আমি যা দেখিতে চাই প্রাণের মাঝে