শেষ বর্ষণ

          দিবাযামিনী আকুল সমীরে।

 

বাদললক্ষ্মীর প্রবেশ

রাজা। ও কী হল নটরাজ, সেই বাদললক্ষ্মীই তো ফিরে এলেন; মাথায় সেই অবগুণ্ঠন। রাজার মানই তো রইল, কবি তো শরৎকে আনতে পারলেন না।

নটরাজ। চিনতে সময় লাগে মহারাজ। ভোররাত্রিকেও নিশীথরাত্রি বলে ভুল হয়। কিন্তু ভোরের পাখির কাছে কিছুই লুকোনো থাকে না; অন্ধকারের মধ্যেই সে আলোর গান গেয়ে ওঠে। বাদলের ছলনার ভিতর থেকেই কবি শরৎকে চিনেছে, তাই আমন্ত্রণের গান ধরল।

ওগো         শেফালিবনের মনের কামনা

কেন         সুদূর গগনে গগনে

আছ         মিলায়ে পবনে পবনে

কেন         কিরণে কিরণে ঝলিয়া

যাও         শিশিরে শিশিরে গলিয়া

কেন         চপল আলোতে ছায়াতে

আছ         লুকায়ে আপন মায়াতে

তুমি     মুরতি ধরিয়া চকিতে নামো না।

আজি         মাঠে মাঠে চলো বিহরি,

তৃণ         উঠুক শিহরি শিহরি।

নামো         তালপল্লববীজনে,

নামো         জলে ছায়াছবি সৃজনে,

এসো         সৌরভ ভরি আঁচলে,

আঁখি         আঁকিয়া সুনীল কাজলে,

মম     চোখের সমুখে ক্ষণেক থামো না।

ওগো         সোনার স্বপন সাধের সাধনা।

কত         আকুল হাসি ও রোদনে,

রাতে         দিবসে স্বপনে বোধনে,

জালি         জোনাকি প্রদীপ-মালিকা,

ভরি          নিশীথ-তিমির থালিকা,

প্রাতে         কুসুমের সাজি সাজায়ে,

সাঁজে          ঝিল্লি-ঝাঁঝর বাজায়ে,

কত   করেছে তোমার স্তুতি-আরাধনা।

ওগো         সোনার স্বপন, সাধের সাধনা।