চিত্রাঙ্গদা
হলে, যেথা স্থান দিবে, সেথায় রহিব
পার্শ্বে পড়ি। যামিনীর নর্মসহচরী
যদি হয় দিবসের কর্মসহচরী,
সতত প্রস্তুত থাকে বামহস্তসম
দক্ষিণহস্তের অনুচর, সে কি ভালো
লাগিবে বীরের প্রাণে।
অর্জুন।                            বুঝিতে পারি নে
আমি রহস্য তোমার। এতদিন আছি,
তবু যেন পাই নি সন্ধান। তুমি যেন
বঞ্চিত করিছ মোরে গুপ্ত থেকে সদা;
তুমি যেন দেবীর মতন, প্রতিমার
অন্তরালে থেকে আমারে করিছ দান
অমূল্য চুম্বনরত্ন, আলিঙ্গনসুধা;
নিজে কিছু চাহ না, লহ না। অঙ্গহীন
ছন্দোহীন প্রেম, প্রতিক্ষণে পরিতাপ
জাগায় অন্তরে। তেজস্বিনী, পরিচয়
পাই তব মাঝে মাঝে কথায় কথায়।
তার কাছে এ সৌন্দর্যরাশি মনে হয়
মৃত্তিকার মূর্তি শুধু, নিপুণচিত্রিত
শিল্পযবনিকা। মাঝে মাঝে মনে হয়
তোমারে তোমার রূপ ধারণ করিতে
পারিছে না আর, কাঁপিতেছে টলমল
করি। নিত্যদীপ্ত হাসির অন্তরে
ভরা অশ্রু করিতেছে বাস, মাঝে মাঝে
ছলছল করে ওঠে, মূহূর্তের মাঝে
ফাটিয়া পড়িবে যেন আবরণ টুটি।
সাধকের কাছে, প্রথমেতে ভ্রান্তি আসে
মনোহর মায়াকায়া ধরি; তার পরে
সত্য দেখা দেয়, ভূষণবিহীন রূপে
আলো করি অন্তর বাহির। সেই সত্য
কোথা আছে তোমার মাঝারে, দাও তারে।
আমার যে সত্য তাই লও। শ্রান্তিহীন