চিত্রাঙ্গদা
ওই দেবালয়মাঝে—হেসে চলে যেতে।
হায় হায়, আজ এত হয়েছে অরুচি
নারীর সৌন্দর্যে, নারীতে খুঁজিতে চাও
পৌরুষের স্বাদ!
এসো নাথ, ওই দেখো
গাঢ়চ্ছায়া শৈলগুহামুখে বিছাইয়া
রাখিয়াছি আমাদের মধ্যাহ্নশয়ন
কচি কচি পীতশ্যাম কিশলয় তুলি
আর্দ্র করি ঝরনার শীকরনিকরে।
গভীর পল্লবছায়ে বসি ক্লান্তকণ্ঠে
কাঁদিছে কপোত, “বেলা যায়” “বেলা যায়”
বলি। কুলু কুলু বহিয়া চলেছে নদী
ছায়াতল দিয়া। শিলাখণ্ডে স্তরে স্তরে
সরস সুস্নিগ্ধ সিক্ত শ্যামল শৈবাল
নয়ন চুম্বন করে কোমল অধরে।
এসো, নাথ, বিরল বিরামে।
অর্জুন। আজ নহে
প্রিয়ে।
চিত্রাঙ্গদা। কেন নাথ।
অর্জুন। শুনিয়াছি দস্যুদল
আসিছে নাশিতে জনপদ। ভীত জনে
করিব রক্ষণ।
চিত্রাঙ্গদা। কোনো ভয় নাই প্রভু।
তীর্থযাত্রাকালে, রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা
স্থাপন করিয়া গেছে সতর্ক প্রহরী
দিকে দিকে; বিপদের যত পথ ছিল
বন্ধ করে দিয়ে গেছে বহু তর্ক করি।
অর্জুন। তবু আজ্ঞা করো প্রিয়ে, স্বল্পকালতরে
করে আসি কর্তব্যসন্ধান। বহুদিন
রয়েছে অলস হয়ে ক্ষত্রিয়ের বাহু।
সুমধ্যমে, ক্ষীণকীর্তি এই ভুজদ্বয়
পুনর্বার নবীন গৌরবে ভরি আনি