চিত্রাঙ্গদা
যমভয় ছাড়া। শুনেছি গেছেন তিনি
তীর্থপর্যটনে, অজ্ঞাত ভ্রমনব্রত।
অর্জুন।     এ রাজ্যের রক্ষক রমণী?
বনচর।                                এক দেহে
তিনি পিতামাতা অনুরক্ত প্রজাদের।
স্নেহে তিনি রাজমাতা, বীর্যে যুবরাজ।
[প্রস্থান
চিত্রাঙ্গদার প্রবেশ
চিত্রাঙ্গদা।     কী ভাবিছ নাথ।
    অর্জুন।                   রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা
কেমন না জানি তাই ভাবিতেছি মনে।
প্রতিদিন শুনিতেছি শত মুখ হতে
তারি কথা, নব নব অপূর্ব কাহিনী।
চিত্রাঙ্গদা।   কুৎসিত, কুরূপ। এমন বঙ্কিম ভুরু
নাই তার—এমন নিবিড় কৃষ্ণতারা।
কঠিন সবল বাহু বিঁধিতে শিখেছে
লক্ষ্য, বাঁধিতে পারে না বীরতনু হেন
সুকোমল নাগপাশে।
অর্জুন।                       কিন্তু শুনিয়াছি,
স্নেহে নারী, বীর্যে সে পুরুষ।
চিত্রাঙ্গদা।                       ছি ছি, সেই
তার মন্দভাগ্য। নারী যদি নারী হয়
শুধু, শুধু ধরণীর শোভা, শুধু আলো,
শুধু ভালোবাসা—শুধু সুমধুর ছলে
শতরূপ ভঙ্গিমায় পলকে পলকে
লুটায়ে জড়ায়ে বেঁকে বেঁধে হেসে কেঁদে,
সেবায় সোহাগে ছেয়ে চেয়ে থাকে সদা—
তবে তার সার্থক জনম। কী হইবে
কর্মকীর্তি বীর্যবল শিক্ষাদীক্ষা তার।
হে পৌরব, কাল যদি দেখিতে তাহারে
এই বনপথপার্শ্বে, এই পূর্ণাতীরে,